কলকাতা ব্যুরো: বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগত প্রকাশ নাড্ডার উত্তরবঙ্গ সফরে প্রায় জনজোয়ার তৈরি হলো বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে শিলিগুড়ি শহরে। আসন্ন দুর্গাপুজোয় করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট দুপুরে কড়া পদক্ষেপ করল। এবার দর্শকশূন্য মন্ডপ রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিলো হাইকোর্ট। অথচ প্রায় একই সময় বিজেপির এই শীর্ষ নেতার শিলিগুড়ি সফরকে কেন্দ্র করে সেখানে যা হল, তাতে করোনা সংক্রমণ যে শুধু সরকার বা আদালতের পক্ষে ঠেকানো কম্ম নয়, তা একেবারেই স্পষ্ট। রাজনৈতিক দলগুলি কাণ্ডজ্ঞানহীন ভাবে শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতির জন্য যেভাবে কাতারে কাতারে লোক জড়ো করার ব্যবস্থা করছে, তাতে এ রাজ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকারক, তা হয়তো পুজোর পরেই বুঝতে পারবে বাংলার মানুষ। এমনকি রবিবার মোহনবাগান উৎসবকে কেন্দ্র করে কলকাতা শহরে যে ভিড় হয়েছে, তাও এককথায় যেকোনো শিক্ষিত দেশের সচেতন নাগরিককে লজ্জা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
এদিন বিজেপি সভাপতি শিলিগুড়ির সভায় তৃণমূল কংগ্রেসের যাবতীয় দুর্নীতি মানুষের কাছে তুলে ধরতে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যে শাসকদলের অত্যাচার এবং কাটমানি সংস্কৃতি সম্পর্কে মানুষকে অবগত করার নির্দেশ দেন তিনি। এদিন শিলিগুড়ি সফরে এসে জেপিন আড্ডা স্বপন আনন্দময়ী মন্দির গান পুজো দিতে সেখানে দলের অন্যান্য নেতারাও হাজির ছিলেন সকালে বিমানবন্দরে তাকে আনতে যান দলীয় নেতা ও সমর্থক রা রীতিমতো ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে মহিলারা লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পড়ে ফুঁ দিয়ে দলের সভাপতি কে শিলিগুড়িতে স্বাগত জানান। এদিন নৌকা ঘাটে এক অনুষ্ঠানে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এবং পরে আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দিরে পুজো দেন।
এদিন সভাপতির এই সফর প্রসঙ্গে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানিয়েছেন, বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনে রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বুথস্তরে দলের কর্মক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর প্রতি সভাপতি বিশেষ জোর দিয়েছেন। রাজ্যের বিজেপি কর্মীরা প্রতিদিন ভয়ঙ্কর লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছেন এবং ইতিমধ্যেই একশোর বেশি দলীয় কর্মী হত্যায় জেপি নাড্ডা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে দাবি সায়ন্তন বসুর।
করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের অবহেলা নিয়েও আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এর আগে শিলিগুড়িতে এই বৈঠকে আসার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর জায়গায় দলের সর্বভারতীয় সভাপতি এদিন হাজির হন। মূলত উত্তরবঙ্গে তুলনায় অনেক শক্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা বিজেপির ফাঁক ফোঁকর গুলি ভরাট করতে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়ে গিয়েছেন দলের সভাপতি।