কলকাতা ব্যুরো- ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল প্রাঙ্গনে নেতাজীর জন্মদিবস উদযাপনের তাল কাটল কতিপয় বিজেপি সমর্থকদের অভব্যতায়। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে ভাষণ দেবার জন্য উদ্যত হতেই শোনা যায় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। তাতেই অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। দৃশ্যতই বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তীব্র নিন্দা করেন । এরপর ভাষণ না দিয়েই পোডিয়াম ছাড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সৌজন্যতার খাতিরে সমস্ত অনুষ্ঠানেই উপস্থিত ছিলেন তিনি। কিন্তু কোথাও যেন ছন্দপতন হয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর’ ভাষণের পরেও ফিরে আসেনি। আজ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। তবে তার মাঝেই কিছু সমর্থকের রাজনৈতিক স্লোগানে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে ভাষণ দেবার পরিবর্তে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সব অনুষ্ঠানেরই একটা শালীনতার মাত্রা থাকা উচিত। এই জন্মদিবস উদযাপন কোন রাজনৈতিক সভামঞ্চ নয়। এটা জনতার অনুষ্ঠান।’ তিনি তীব্র প্রতিবাদের সাথে আরও বলেন, ‘কাউকে আমন্ত্রণ করে অসম্মান করা উচিত নয়। এখানে আমাকে প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যপাল আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, আমি তাদের ডাকে সাড়া দিতেই এসেছি। কিন্তু এই অভব্য আচরণের প্রতিবাদে আমি এই পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে আর কিছু বলব না। জয় হিন্দ ! জয় বাংলা !’
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর নরেন্দ্র মোদি ‘বহেন মমতা’ দিয়ে ভাষণ শুরু করলেও সেই আগের ছন্দে আর অনুষ্ঠান ফিরে যায়নি। তবে বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান হয়েছে। এমনকি বিজেপির একাংশও মনে করছে এই স্লোগান দেওয়া উচিত কাজ হয়নি। এই ছন্দপতনে রাজ্যের বিজেপি সমর্থকদেরই দুষছেন ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ব্যঙ্গ করা হয়েছে’। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যও এই ঘটনা অনভিপ্রেত বলেই মনে করছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরিও জানান,’পরিকল্পিতভাবে মমতাকে অপমান করা হয়েছে। আজ যা ঘটেছে তা নিন্দনীয়।’ এইসমস্ত বিরোধীতার মাঝে রসিকতার রসদ খুঁজে পেয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। তিনি জানিয়েছেন, সমর্থকরা নিছকই মজা করার জন্য স্লোগান তুলেছিল, অপমান করার জন্য নয়। আপাতত এই বিষয়ে সরগরম রাজনৈতিক মহল। নেতাজীর জন্মজয়ন্তীতে এমন ঘটনা সত্যিই অত্যন্ত দুঃখজনক। হয়ত নেতাজীর কাঁধে ভর দিয়েই ২১-র নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাইছে বহু রাজনৈতিক দল, কিন্তু তাঁর জন্মদিবসে এমন ঘটনা সারা বাংলার মানুষের কাছে অত্যন্ত অনভিপ্রেত।