মৈনাক শর্মা
প্রায় দশ বছর পর আবারও খবরে জাপানের ফুকুশিমার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ২০১১ সালের ১১ মার্চ সুনামির জন্যে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মারা যায় কয়েক হাজার মানুষ। আজ আবার সেই ফুকুশিমা খবরের শিরোনামে। কারণ সম্প্রতি ওই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র র জমা নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর যুক্ত আবর্জনা জল সমুদ্রে ফেলবার সিদ্বান্ত নেয় জাপান সরকার। 

ঠিক কী হয়েছিল ২০১১ সালে?
পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রে প্রধানত তৈরি হয় বিদ্যুৎ। যা তৈরিতে মূলত লাগে ইউরেনিয়াম ও জল। এছাড়াও জলের প্রয়োজন হয় পরমাণুর চুল্লি গুলিকে ঠান্ডা করতে। কিন্তু ২০১১ সালের ওই দিনে সমূদ্রে নীচে ভূমিকম্পের ফলে দেখা দেয় সুনামি। প্রায় ১৫ মিটার লম্বা সমুদ্রের ঢেউ বিচ্ছিন্ন করে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রর পাওয়ার সাপ্লাই। কেন্দ্রের সমস্ত মোটরগুলি বন্ধের ফলে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় সমস্ত কুলিং সিস্টেম। যার জেরে অতিরিক্ত উত্তাপের কারণে বিস্ফোরণ ঘটে চিমনি গুলিতে। এই দুর্ঘটনার প্রভাব যাতে আম নাগরিক মহলে না ছড়ায়, তাই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রর প্রায় ২০ কিমি এলাকা খালি করা হয়। যার কারণে ঘর ছাড়া হয় প্রায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার মানুষ।
গত ১০ বছর
তবে এই দুর্ঘটনার দশ বছর পরও জাপানের ফুকশিমায় মেটেনি চুল্লি ঠান্ডা করার সমস্যা। যার জন্য দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ট্যাংকের মাধ্যমে নিয়ে আশা হয় জল। আর সেই আবর্জিত জল জমে মাটির নিচে থাকা ট্যাংক গুলিতে যাদের আইসওয়াল বলা হয়। কিন্তু ওই ট্যাংক বা আইস ওয়াল ২০২২ সালের মধ্যে ভর্তি হয়ে যাবে বলে দাবি করে তেম্পকো কোম্পানি। তাই ১.৩ মিলিয়ন বা এক কোটি টনের বেশি তেজস্ক্রিয় রশ্মি যুক্ত জল ছাড়তে চায় সমুদ্রে।


জলে বিষ আশংকা
নিউক্লিয় রিয়েক্টর ক্যানসার রোগের লক্ষণ। আর ওই জল সমুদ্রে মিসলে ক্ষতি হতে পারে সামুদ্রিক মাছের ও পরিবেশের, যার ফলে বিষাক্ত হবে সামুদ্রিক মাছ, ওই মাছ  বা জল মানব দেহে গেলে ছড়াতে শুরু করবে ক্যান্সার। ফলে একলাফে কমবে দক্ষিণ কোরিয়ায় মাছের দাম । তাছাড়া একবার ওই অবর্জিত জল ছাড়তে শুরু করলে কয়েক বছরের মধ্যেই ওই জল ছড়িয়ে পড়বে গোটা দুনিয়াতে। দূষিত হবে গোটা দেশের সমুদ্র সৈকত। জাপানের এই সিদ্ধান্তেকে মানতে নারাজ চিন সহ সাউথ কোরিয়া। জাপানের সিদ্বান্তর বিরোধী প্রতিবাদ মিছিল দেখা যায় দুই দেশের রাজপথে। শুধু তাই নয়, জাপাানের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে গ্রেটা সহ বিশ্বের পরিবেশ বীদরা। 

বিরোধিতা গ্রেটা সহ পরিবেশবিদদের
জল ফিল্টারের মধ্যে আইসোটোপ অণু গুলিকে বাদ দিলে কেবল পরে থাকবে ট্রিতিয়াম, যা ক্ষতি করবে না সামুদ্রিক পরিবেশ , চিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার চিন্তায় জবাব দেয় জাপান সরকার ও টেপকো কোম্পানি। তবে এই প্রক্রিয়া আদেও কতটা সফল তা প্রশ্নের মুখে রয়েছে বিজ্ঞানীদের। দূষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকছে ভূ বিজ্ঞানী ও  পরিবেশ বিদরা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version