এক নজরে

#Vice President Election : উপ-রাষ্ট্রপতি পদে এনডিএ-র প্রার্থী জগদীপ ধনকড়, টুইট করে অভিনন্দন মোদীর

By admin

July 16, 2022

কলকাতা ব্যুরো: উপরাষ্ট্রপতি পদেও (Vice President Election) বড়সড় চমক দিলো বিজেপি। এনডিএ মনোনীত উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী (Vice President Election) বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শনিবার দলের সংসদীয় বৈঠকের পর এমনটাই ঘোষণা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। ইতিমধ্যে ধনকড়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।

উল্লেখ্য, গত দু’দিন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন ধনকড়। তখনই এনডিএ মনোনীত উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হতে পারে বলে জল্পনা চলছিল। আর শনিবার সেই জল্পনাতেই সিলমোহর পড়লো। তবে রবিবার বিরোধী শিবিরের বৈঠক শেষে উপরাষ্ট্রপতি পদের (Vice President Election) জন্য কার নাম ঘোষণা করা হয়, সেটাই এখন দেখার।

সূত্রের খবর, আগামী ১৯ জুলাই উপরাষ্ট্রপতি পদে (Vice President Election) মনোনয়ন পেশ করবেন জগদীপ ধনকড়। অঙ্কের বিচারে তাঁর জয় একপ্রকার নিশ্চিত। হিসেব বলছে, উপরাষ্ট্রপতি পদে পদ্মশিবিরের প্রার্থীকে জেতাতে ৩৯০টি ভোট প্রয়োজন। এদিকে বিজেপির নিজের হাতে ৩৯৪টি ভোট রয়েছে। ফলে ধনকড় যে ভারতের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি হচ্ছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিন ধনকড়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদি টুইটারে লেখেন, সংবিধান সম্পর্কে অভিজ্ঞ জগদীপ ধনকড়। সংসদীয় বিষয় সম্পর্কেও যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে তাঁর। আমি বিশ্বাস করি, রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের উপযুক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

রাজস্থানের কৃষক পরিবারের সন্তান আইনজ্ঞ জগদীপ ধনকড়। পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদও বটে। ১৯৯০ সালে সংসদীয় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত রাজস্থানের কিষাণগড়ের বিধায়ক ছিলেন। এমনকী, জয়পুরের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিলেন তিনি। পরবর্তী সময় ২০০৩ সালে বিজেপিতে যোগ দেন কৃষক পরিবারের সদস্য ধনকড়। এরপর ২০১৯ সালে তাঁকে বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

তবে বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক ভালো নয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রায় প্রতিক্ষেত্রেই রাজ্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন তিনি। তবে সম্প্রতি দার্জিলিংয়ের রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীকে চায়ের আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল। মমতা নিমন্ত্রণ রক্ষা করেন। দার্জিলিংয়ে দু’জনের দেখা সাক্ষাৎ ও কথাবার্তাও হয়। এরপরই প্রায় গোপনে দিল্লি সফরে যান ধনকড়। শুক্র ও শনি পরপর দু’দিন অমিত শাহ এবং মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ সারেন তিনি। এরপরই বড় চমক দিল বিজেপি। তবে এবার বাংলার রাজ্যপাল পদের দায়িত্ব কার হাতে তুলে দেয় কেন্দ্র, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বিজেপির এই শনিবাসরীয় ঘোষণা কার্যত বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে বিরোধীদের। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় এখনই মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা। বাংলার শাসকদল তৃণমূলের তরফে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না দল। ২১ জুলাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখান থেকেই তৃণমূলের অবস্থান ঠিক করা হবে। তার আগে পর্যন্ত দল সব কিছুর দিকে নজর রাখছে, তবে কোনও মন্তব্য নয়।
পাশাপাশি জগদীপ ধনকড়কে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী (Vice President Election) করা নিয়ে কংগ্রেসের তরফেও সেভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ তথা দলের প্রচার কমিটির প্রধান জয়রাম রমেশ টুইট করলেও সরাসরি ধনকড়কে নিয়ে কোনও শব্দই নেই তাতে বরং তিনি এখনকার উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে বিদায়বার্তা দিয়েছেন। বেঙ্কাইয়ার নেতৃত্বে রাজ্যসভার অধিবেশন কীভাবে চলত, তা উল্লেখ করে তাঁর প্রশংসাই করেছেন কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র। এছাড়া হাত শিবিরের তরফে সোনিয়া গান্ধী কিংবা রাহুল গান্ধী এখনও এ বিষয়ে চুপ।

ধনকড় এই মুহূর্তে বাংলার রাজ্যপাল। আর এই অবস্থায় জগদীপ ধনকড়ের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী (Vice President Election) হওয়া নিয়ে শাসকদলের প্রতিক্রিয়ার দিকে নজর ছিল সব মহলেরই। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে কৌশলগত অবস্থানই নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ধনকড়কে সমর্থন কিংবা বিরোধীরা মিলে তাঁর বিরুদ্ধে আলাদা প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কোনও কথা বলতেই নারাজ।

উল্লেখ্য, গত ২ দিনে দিল্লি সফরে গিয়ে মোদি এবং শাহর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছিলেন ধনকড়। হয়তো তাঁকে গুরুদায়িত্ব দেওয়ার কথা তখনই বলা হয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের তরফে।