এক নজরে

২০০ বছরে বিদ্যাসাগর : আদর্শ ও প্রাসঙ্গিকতা

By admin

September 26, 2020

বীরসিংহ এর রত্ন। আক্ষরিক অর্থেই সিংহ। বিদ্যাসাগর ছাড়া বাঙালি এবং বাংলা সমাজকে ভাবাই যায় না। শুধু বাঙালি বলি কেন ? ভারত তথা বিশ্বের কাছে বাঙালি সমাজের গরিমার কথা তুলে ধরেছিলেন বিদ্যাসাগর।

বাঙালিকে সহজ করে বাংলা গদ্য লেখাও শিখিয়েছেন তিনিই। বাংলা গদ্য লেখার প্রাণপুরুষ বিদ্যাসাগর মশাই। শুধু কি গদ্য লেখা ? মধ্য যুগের বাংলা সমাজকে আধুনিকতার আলো ও দেখিয়েছিলেন তিনি।

সতীদাহ প্রথা, বাল্য বিবাহ, এবং বহুবিধ কুসংস্কার আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে তদানীন্তন ভারতবর্ষে গর্জে ওঠার স্পর্ধার আর এক নাম বিদ্যাসাগর। ব্রাহ্মণ্যবাদ ও হিন্দুদের ধ্বজা ওড়ানো এক শ্রেণীর জটিল ও কুটিল, স্বার্থান্বেষী সমাজ ব্যবস্থাকে শিকড় ধরে নাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। বিধবা বিবাহের প্রবক্তা তিনি। তখনকার দিনের ভারতবর্ষে , না না শুধু তখনকার কেন এখনকার দিনের ভারতবর্ষে দাঁড়িয়ে এত উদারতা দেখানোর ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে। বিদ্যাসাগর নামটা এখনকার ভারতবাসীকে ও আধুনিকতার আলো দেখাচ্ছে।

একদিকে সংস্কৃত পন্ডিত আর একদিকে আধুনিকতার মূর্ত প্রতীক। প্রশ্ন তুলেছিলেন, শিক্ষা কেন ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ থাকবে ? ধনী – গরীব , জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্য শিক্ষার দাবি বঙ্গ সমাজে বোধহয় বিদ্যাসাগরই প্রথম তুলেছিলেন। এখন যখন শিক্ষাকে অবহেলা করা হয় বা শিক্ষা শুধুই মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের হাতে তুলে দেবার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত ভাবে সরকারি উদ্যোগে করার সমস্ত প্রয়াস হয়, তখন আবারও এই মহান ব্যক্তিত্বকে স্মরণের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তার ত্যাগ, জেদ, অহঙ্কার আর সর্বোপরি মানুষের প্রতি ভালোবাসা আজ এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে অনুকরণীয় এবং প্রশংসনীয়।

তাঁর অসম্ভব মেধার কথা সবারই জানা। রেলের ফলক দেখে সংখ্যা চেনা বা রাস্তায় আলোতে বসে পড়া কোনো বাঙালিরই অজানা নয়। কিন্তু কতজন এই মেধাকে এখন আর জগতের হিতের বা মঙ্গলের জন্য কাজে লাগান ? এই স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক দুনিয়ায় বিদ্যাসাগর অমর হয়ে থাকুন। এই টুকুই। তাঁর ২০০ বছরের জন্মদিনে শত কোটি প্রণাম।