এক নজরে

স্রেফ রাজনীতির কারণেই কি বাংলার মাটি রক্তে ভেজে

By admin

March 23, 2022

সোমবার সন্ধ্যায় রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পরই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে রামপুরহাট। ‘বদলা’ নিতেই পরপর কয়েকটি বাড়িতে জ্বলে ওঠে আগুন। সেই আগুনে পুড়েই এখন পর্যন্ত মহিলা, শিশু-সহ কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কে বা কারা খুন করল ভাদু শেখকে? পরবর্তীতে কারাই বা পাল্টা আগুন লাগালো বগটুই গ্রামের একাধিক বাড়িতে যার কারণে অতগুলি প্রাণ ছাই হল?

বগটুই ঘিরে বঙ্গ রাজনীতি যতই তোলপাড় হোক না কেন সেই প্রশ্নটাই কিন্তু ঘুরে ফিরে সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে- শুধুমাত্র রাজনীতিই কি গণহত্যার একমাত্র কারণ?

প্রসঙ্গত, বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুনের ঘটনা এবং তার বদলা নিতেই অগ্নিসংযোগ ও মহিলা, শিশু-সহ দশ জনের মৃত্যু। তবে রাজ্য পুলিশ রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের এই ঘটনার কারণ হিসাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কারণ বলে মনে করছে না। অন্যদিকে বীরভূমের জেলা সভাপতি জানান, শর্ট সার্কিট থেকে টিভি ফেটে তিন-চারটি বাড়িতে আগুন লেগেছিল। সঙ্গে সঙ্গে দমকল গিয়ে আগুন নেভানো শুরু করে।

সোমবার সন্ধ্যায় ভাদু একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা মারছিলেন। ঠিক সেই সময় কয়েকজন তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। উল্লেখ্য, এই ঘটনার প্রায় ১৫ মাস আগে (২০২১ সালের ৫ই জানুয়ারি) খুন হয়েছিলেন ভাদুর ভাই বাবর শেখ। তিনিও সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন। সূত্রে খবর অনুযায়ী বাবর এক সময় ট্রাক্টর চালাতেন। পরে রামপুরহাট শহরে মুরগি ব্যবসায়ীর গাড়ি চালাতেন। দাদা ভাদু পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হয়ে ক্ষমতায় এলে বাবর গাড়ি চালানো ছেড়ে ঠিকাদারি ও দাদার বিভিন্ন ব্যবসার দেখাশোনা করতেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা অনুযায়ী, বড়শাল গ্রাম পছায়েতের উপপ্রধান ভাদুর একাধিক ব্যবসা নিয়ে দলের অন্য একটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল অনেকদিন আগেই। সেই আক্রোশ প্রথমে পড়ে বাবর পরে ভাদুর উপর। এবার দুটি খুনের অভিযোগ উঠেছে ভাদুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

এদিকে ভাদু শেখের স্ত্রীর স্পষ্ট অভিযোগ, “আততায়ীরাও তৃণমূল। কেবল ভাদু নয়, একবছর আগে বাবরকেও ওরাই খুন করে। কিন্তু পুলিস কোনও তদন্ত করেনি, নিষ্ক্রিয় হয়ে বসেছিল। রবিবার রাতে ওরা সবার বাড়ি বাড়ি ফোন করে ধমকি দিয়ে বলে, ‘ও তো বগটুই মোড়ে থাকে, কোথায় ওঠে, কোথায় বসে, কী করে, সব তো জানি। ওর উপর বোমা ফেলব’। ওরাও তৃণমূল করত। আমার স্বামীর সাথেই থাকত। ভাদুর দাদার মৃত্যুর পর থেকে ওরা আর সাথে থাকে না”।তার মানে ভাদু শেখ যে খুন হবেন সেই আশঙ্কা অনেক আগেই করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। প্রশ্ন ভাদুর খুনিরাই যদি বাবরকে খুন করে থাকে তাহলে অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিভাবে, ভাদুর স্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, পুলিস কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে। তাছাড়া তিনি তৃণমূল দলকেও তাঁর অভিযোগ জানান। কিন্তু পুলিশ বাবরের ঘটনায় যেমন কোনও তদন্ত করেনি নিষ্ক্রিয় থেকেছে এবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বলে অভিযোগ তুলেছেন।