এক নজরে

শুধু এলএসি নয়, ভারত সাগরেও দখল বাড়ছে চিনের

By admin

October 13, 2020

প্রতিবেশী ভারতকে আক্রমণ করতে ঢাকার পর এইবার চিনের নজর কলম্বো। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার জন্য ৯০ মিলিয়ন ডলারের সাহায্যের ঘোষণা করেছে চিন সরকার । চিনা বিনোয়োগ শ্রীলঙ্কার জন্য কোনো ঋন ফাঁদের কৌশল নয়।এই নীতি যা ২০১৭ সালে চিনের শ্রীলঙ্কার বন্দর হাম্বানটোটা অধিগ্রহনের ভাবমূর্তিকে জনগণের থেকে আড়াল করতে বা চিনের ব্র্যান্ড বেল্ট এন্ড রোড প্রকল্পের জন্য এই সাহায্য শ্রীলঙ্কাকে। এই প্রকল্পের ফলে সুবিশাল বন্দর এয়ারপোর্ট রাস্তা ও পাওয়ার স্টেশন তৈরি করে একাধিপত্য কয়েম করবে।

প্রতিবেশীর সাথে চিনের বেড়ে ওঠা বিনোয়োগ চাপে ফেলবে দিল্লিকে। কেবলমাত্র কূটনৈতিক নয় চীনের প্রভাব পড়বে ভারত মহাসাগরেও। জলদস্যু নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় চিন সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে তেল আমদানির উপর চিনের নির্ভরশীলতা বাড়ার সাথে সাথে এই নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মায়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, বন্দর উন্নয়ন করে নিজের উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে।

শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর, পাকিস্তানের গওয়াদার বন্দর, মায়ানমারের কিউকপিউ বন্দর এবং কৌশলগতভাবে মালদ্বীপে অবস্থিত মেগা কাঠামো সহ বন্দর আকারে বড় বড় প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ করে চিন এই দেশগুলিকে আর্থিকভাবে নির্ভরশীল এবং এই বন্দরগুলির উপর চিনের অহেতুক কৌশলগত নিয়ন্ত্রণের জন্য চরম দুর্বল করে তুলছে।

চিনের তেল আমদানির প্রায় ৮০ শতাংশ মালাক্কা উপকূলের মধ্য দিয়ে হয়। গওয়াদার( পাকিস্তান ) বন্দরের বিকাশের পরে দিল্লি ভারত মহাসাগরে উপর কৌশলগত সুবিধা হারাবে।ভারত মহাসাগরে চিনের বেড়ে ওঠা দখল ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও নিজের অঞ্চলে চলাচলের স্বাধীনতা হ্রাস করতে পারে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিবিদদের মতে, ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব উন্নয়নের হুমকি স্বরূপ বেজিং বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে তার সার্বভৌমত্বের দাবি জানিয়ে ভারতকে ভিয়েতনাম থেকে সরে আসতে বাধ্য করতে পারে ।

তাহলে ভারত বিনিয়োগে পিছিয়ে কেন ?

শ্রীলঙ্কাতে দুই দেশের ক্রমবর্তমান বিনিয়োগের ধারা লক্ষ করলে দেখা যাবেঅমান্থায় থেকে পাল্লায় রেল প্রকল্পে ভারতের বিনিয়োগ $১৮৫.২৬ মিলিয়ন যার জবাবে চিন হাম্বানটোটাতে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া স্থানহারা জনগণের উদ্দেশ্যে ৪৩ হাজার ঘর বানানোর প্রকল্পে ২৭০ মিলিয়ন বুনিয়োগ করে ভারত যা চিনের কলম্বো হাৰবোৰ কন্টেইনার প্রকল্পের থেকে কম অর্থাৎ অর্থের দিকে ঘাটতি লক্ষণীয়।এছাড়া বাংলাদেশে তিস্তা প্রকল্পে দেরি ও ইরানের চাবাহার বন্দর থেকে রেল প্রকল্পের দেরির ফলে অসন্তোষের শিকার হচ্ছে ভারত।

ভারত একাধিক নীতির মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে চিনের উত্থানের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে।যার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক এবং একাধিক আঞ্চলিক জোট যেমন ‘কোয়াড’ এবং এশিয়া-আফ্রিকা গ্রোথ করিডোর বিল্ডিং, নৌ পরিকাঠামো এবং নৌ সক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দিল্লি বিশ্বাস করে যে দক্ষিণ চিন সাগরের মতো আঞ্চলিক বিরোধের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা উচিত। কূটনৈতিক জটিলতা কাটিয়ে অসমাপ্ত প্রকল্পগুলিকে দ্রুত তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।