কলকাতা ব্যুরো: ইউক্রেনে ( #Ukrain) ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। কিয়েভ, খারকভ-সহ পড়শি দেশটির সামরিক ঘাঁটিগুলিতে লাগাতার বোমাবর্ষণ করে চলেছে রুশ বিমানবাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করলো সে দেশের ভারতীয় দূতাবাস। আপাতত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পাড়ি না দেওয়ার জন্য সে দেশে থাকা ভারতীয়দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুটি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভারতে ফিরেছে নাগরিকদের নিয়ে। তবে এখনও কয়েক হাজার ভারতীয় ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সোমবারই রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকা সহ ইউক্রেনে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন বর্তমানে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই পড়ুয়া। তাঁদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাই ভারতের কাছে অগ্রাধিকার পাবে বলেও জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের তরফে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ হেল্পলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছে। নম্বরগুলি হল- ১৮০০১১৮৭৯৭ (টোল ফ্রি), +৯১–১১–২৩০১২১১৩, +৯১–১১ৃ–২৩০৪১০৪, +৯১–১১–২৩০১৭৯০৫।
ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসের নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যাঁরা কিয়েভের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তাঁরা নিজের নিজের বাসস্থানে ফিরে যান। বিশেষ করে দেশের পশ্চিম সীমান্তে নিরাপদ জায়গার উদ্দেশে রওনা হন আপনারা। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। এই বিষয়ে আরও নির্দেশিকা জারি করা হবে।
উল্লেখ্য, একদিন আগেই ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল ভারতীয় দূতাবাস। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন ও রাশিয়া দুই দেশই ভারতের বন্ধু। ফলে এখানে আফগানিস্তান বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মতো প্রতিকূল পরিস্থিতি নেই। তবে ধারাবাহিক বোমাবর্ষণে যেকোনও সময় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
সূত্রের খবর, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ( #RussiaUkraineConflict ) নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ভারত। আগামিদিনে কূটনৈতিক মঞ্চে কী পদক্ষেপ করা হবে এবং কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যাবে, তা ঠিক করতে জরুরি বৈঠকে বসেছে বিদেশমন্ত্রক। পরিস্থিতির উপর বিশেষ নজর রাখছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
এদিকে, ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের জন্য চব্বিশ ঘণ্টার বিশেষ কন্ট্রোলরুম শুরু করেছে বিদেশমন্ত্রক। একইসঙ্গে, নয়াদিল্লির ইউক্রেন দূতাবাসের সামনে উপস্থিত হয়েছেন বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলে খবর। উল্লেখ্য, ইউক্রেন নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে নয়াদিল্লি বলেই মত বিশ্লেষকদের কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত মজবুত। সোভিয়েত জমানা থেকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রুশ অস্ত্র বেশি কেনে ভারত। দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কও অত্যন্ত শক্তিশালী। সেই সম্পর্ক কিছুতেই নষ্ট করতে চায় না মোদি সরকার। তাই আমেরিকা সুর চড়ালেও এখনও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত।
অন্যদিকে, অস্ত্র আমদানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল। ফলে অত্যন্ত জটিল সমীকরণ নিয়ে আপাতত উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা করে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অর্থাৎ কার্যত ইউক্রেন দখলের পথেই হাঁটল মস্কো। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে এমনটাই খবর।
রাশিয়ার এই চরম পদক্ষেপে কার্যত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডঙ্কা বাজিয়ে দিল বলেই মনে করেছে ওয়াকিবহাল মহল। যার বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে গোটা বিশ্বে।