কলকাতা ব্যুরো: ট্রেন লেটের কারণে ফের বেকায়দায় পড়লো রেল কর্তৃপক্ষ। ট্রেন লেটের কারণে মিস হয়েছে ফ্লাইট। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ তুলে রেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন জনৈক এক যাত্রী। সেই মামলায় এবার রেলকে ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর যে ঘটনা রীতিমতো নজিরবিহীন বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। 

জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ২০১৬ সালের জুন মাসের। সঞ্জয় শুক্লা নামের এক যাত্রীর টিকিট ছিল আজমের-জম্মু এক্সপ্রেসে। জম্মুতে পৌঁছনোর পরই সেখান থেকে ফ্লাইটে চেপে তাঁর শ্রীনগর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, ট্রেনটির সকাল ৮টা ১০ মিনিটে জম্মুতে পৌঁছনোর কথা ছিল, তবে তা গন্তব্যে পৌঁছয় প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে। আর সেই কারণেই বেলা ১২টার ফ্লাইট মিস করেন সঞ্জয় শুক্লা। ফ্লাইট মিস করার দরুণ সপরিবারে সড়কপথে শ্রীনগর পৌঁছতে হয় ওই যাত্রীকে। গাড়ি ভাড়া বাবদ খরচ পড়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। সেইসঙ্গে থাকার জন্য দিতে হয় আরও ১০ হাজার টাকা।

জানা গিয়েছে, এরপরই সঞ্জয় শুক্লা নামের ওই যাত্রী রেলের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ক্রেতা সুরক্ষা ফোরামে অভিযোগ করেন। ফোরাম রেলকে ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ক্রেতাসুরক্ষার জাতীয় ফোরামও রাজ্য ফোরামের নির্দেশ বহাল রাখে এবং এরপরই রেল এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়।

সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে রেল। দেরির দায় রেলকেই নিতে হবে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে ট্রেন লেটের জন্য যাত্রীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম রেল আইনে নেই বলে সরকার তর্ক করলেও তা মানতে চায়নি আদালত। পরিবর্তে বলা হয়েছে, যাত্রীর সময়ও যথেষ্ট মূল্যবান। আর তার দায় কাউকে নিতেই হবে।

এ বিষয়ে উত্তর-পশ্চিম রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক অভয় শর্মা বলেন, এখনই এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। আগে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি হাতে পাই। তারপর সেইমতো পদক্ষেপ করা হবে।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সময় দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস ট্রেন অত্যন্ত দেরিতে চলার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। এমনকী নির্দিষ্ট মর্মে রেলের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হলেও যে সুরাহা তেমন কিছু মেলে না, সেই অনুযোগও করেন সাধারণ যাত্রীদের বড় অংশ। শীতকালে কুয়াশার কারণে উত্তর ভারতগামী ট্রেনগুলির ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেরিতে চলার ঘটনাও নতুন কিছু নয়। অতীতে এই ব্যাপারে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও পর্যন্ত যথাযথ পদক্ষেপ করতে পারেনি রেল। সম্প্রতি ট্রেন লেটের জন্য সংশ্লিষ্ট তেজস এক্সপ্রেসের যাত্রীদের কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রেলেরই আওতাধীন আইআরসিটিসি। এসব সত্ত্বেও ট্রেন লেটের ঘটনা আদৌ কমবে? প্রশ্ন তুলছে যাত্রীদের একাংশ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version