কলকাতা ব্যুরো: অগ্নিপথ প্রকল্প ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। সেনাবাহিনীতে নিয়োগের নয়া নিয়মের প্রতিবাদে প্রবল বিক্ষোভ চলছে গোটা দেশজুড়ে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিহার ও উত্তরপ্রদেশের। কেবল বিহারেই আন্দোলনকারীদের তাণ্ডবের ধাক্কায় ২০০ কোটির ক্ষতির মুখে ভারতীয় রেল। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রেলের ৬০টি কামরা ও ১০টি ইঞ্জিন। শনিবার সকালেও নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই আরও খারাপ হচ্ছে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা যাচ্ছে, রেল এখনও পর্যন্ত ২৩৪টি ট্রেন বাতিল করেছে। এর মধ্যে ৯৪টি মেল ট্রেন ও ১৪০টি যাত্রীবাহী ট্রেন। ৩৪০টি ট্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে শনিবারই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠানো হয়েছে সব স্টেশন ও অন্যত্র নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি করার জন্য। পাশাপাশি জাতীয় সম্পত্তি ধ্বংসকারীদের চিহ্নিত করতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। শুক্রবার সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে হওয়া বিক্ষোভ-হামলায় মৃত্যু হয়েছে দামিরা রাকেশ নামের এক ২৪ বছরের তরুণের। তাঁর পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর। পাশাপাশি তাঁর পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীর লোকবল অক্ষুন্ন রেখে আধুনিকীকরণের স্বার্থে কেন্দ্রের নতুন প্রকল্প অগ্নিপথ। এর মাধ্যমে সেনায় অস্থায়ীভাবে ৪ বছরের জন্য কর্মী নিয়োগ হবে। যাদের পোশাকি নাম ‘অগ্নিবীর’। কিন্তু কেন্দ্রের ঘোষিত এই অগ্নিপথ প্রকল্প দেশজুড়ে সেনায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে অস্থায়ী পদে নিয়োগ নিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা অসন্তুষ্ট।
ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। সরকারের দাবি, এভাবে সেনায় নিয়োগ হলে বেতন এবং পেনশন বাবদ অর্থ সাশ্রয় হবে। সেই টাকা সেনার প্রযুক্তির উন্নতির কাজে লাগানোর ভাবনা রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের। কেনা হবে আরও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র। যুব সমাজকে দেশসেবা এবং প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ দিতে চাইছে সরকার।
বর্তমানে ভারতীয় সেনা বাহিনীর জওয়নাদের গড় বয়স ৩২ বছর। অগ্নিবীরদের নিয়োগের ফলে ১০ বছরের মধ্যে সেটা নেমে আসবে ২৬ বছরে। এক্ষেত্রে বাহিনী তরতাজা এবং শারীরিক সামর্থ্যে ভরপুর হবে বলে দাবি কেন্দ্রের।