কলকাতা ব্যুরো: ভারতের ১২০ জন আধিকারিককে আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করে দেশে নিয়ে এল বায়ুসেনা। বায়ুসেনার সি-১৭ বিমান মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ গুজরাতের জামনগরে অবতরণ করে৷ বিমানে আফগানিস্তানের ভারতীয় দূতাবাসের কর্মরত আধিকারিকরাও দেশে ফিরেছেন।
এদিকে দেশে নেমে কাবুলে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রুদ্রেন্দ্র ট্যান্ডন বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানের মানুষকে পরিত্যক্ত করিনি।’ ট্যান্ডন এদিন বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানের মানুষকে পরিত্যক্ত করিনি। তাদের কল্যাণ এবং তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক আমাদের মনে অনেক বেশি। আমরা আমাদের সম্পর্ক বজায় রাখব, তবে তা কোন আকারে হবে তা এখনই বলতে পারব না। অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে।’
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এটা ঠিক করা হয়েছে যে, কাবুলে আমাদের রাষ্ট্রদূত ও ভারতীয় কর্মীদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে৷ সেই মতোই ১৫ আগস্ট কাবুলে রওনা দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার দু‘টি বিমান৷ কাবুল তালিবান দখলে চলে যাওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হয়েছে প্রতিবেশী দেশে ৷ ভারতীয় দূতাবাসও তালিবানের নজরদারিতে চলে যায় বলে সূত্রের খবর ৷ অধিকাংশ আন্তর্জাতিক দূতাবাস যেখানে রয়েছে, সেই উচ্চ নিরাপত্তার গ্রিন জোনের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয় ৷ ভারতে আগত আফগানদের ভিসা যেখান থেকে দেওয়া হয়, সেই ভিসা এজেন্সিতেও হানা দেয় তালিবানরা ৷
প্রসঙ্গত, সোমবার বায়ুসেনার বিমানে প্রথম ধাপে যে ৪৫জন ভারতীয় আধিকারিককে উদ্ধার করা হয়েছিল, তাঁদের বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে আটকেছিল তালিবান ৷ পরে তাঁদের ছাড়া হয় ৷ এরপর কাবুল বিমানবন্দরে গতকালের ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যেই কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভারতীয় কূটনীতিকদের একাংশকে নিয়ে টেক অফ করে বায়ুসেনার বিমান ৷
কিন্তু এরপর আফগানদের দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয় ৷ বিমানের চাকা জড়িয়ে দেশ থেকে পালাতে গিয়ে মাঝ আকাশ থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে ৷ চলন্ত বিমানে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় স্থানীয়দের ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে তালিবানের ছোড়া গুলিতে বিমানবন্দরে ঝাঁঝরা হয়ে যান কয়েকজন যাত্রী ৷ বন্ধ করে দেওয়া হয় বিমানবন্দর ৷ ফলে বায়ুসেনার অপর বিমানটি কাবুলেই আটকে পড়ে ৷
এরপর সারারাত ধরে নানা মহলে ফোন করে তদ্বির করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ৷ তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও ৷ বহু চেষ্টার পর মঙ্গলবার সকালে বিমানটি কাবুল বিমানবন্দর থেকে টেক অফ করে ৷ ভারতীয় আধিকারিকদের নিয়ে জামনগরে অবতরণ করে বিমানটি ৷ সেই বিমানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রুদ্রেন্দ্র ট্যান্ডন-সহ ১২০ জন আধিকারিক ছিলেন ৷ দেশের মাটিতে পা রেখেই সবাই বলে ওঠেন ‘ভারত মাতা কি জয়’ ৷