মৈনাক শর্মা
এ যেনো ভূতের মুখে রাম নাম।চিন ও ভারতের এল এ সির পর ভারত-পাকিস্থান সীমন্তে এল ও সি তেও শান্তির বার্তা দিল ইসলামাবাদ। সীমান্তে শান্তির জন্য বৈঠক করতে রাজি ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন লেফটেন্যান্ট জনারেল পরমজিত সিং সংঘা এবং পাকিস্থানি মেজর নমান জাকারিয়া। এর আগে ২০০৩ সালেও ঠিক একই রকমের প্রস্তাব দেয় পাকিস্থান। কিন্তু তার পরেও সীমা উত্তেজনা বজায় রাখে পাকিস্থান। তবে বেজিং এর সাথে বন্ধুত্ব পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পরই ইসলামাবাদের শান্তি প্রস্তাব চীনের কৌশল বলে মানছেন বিশ্লেষকরা। তবে যাই হোক, চীন ও পাকিস্থান সীমায় শান্তি লক্ষ করা যেতে পারে কয়েকদিন। যা করোনাকালে দেশের উন্নয়নের দৃষ্টিতে দিল্লির জন্য আপাতত স্বস্তির কারন। তাছাড়া শ্রীলঙ্কাতে দিল্লির কূটনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পাক প্রানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণ বাতিল করলেও, শ্রীলঙ্কা সফরে ইমরান খানের বিমানকে ভারতের আকাশ পথ ব্যবহারের অনুমতি দেয় দিল্লি । ফলে দিল্লির তরফেও বন্ধুত্বের ইঙ্গিত রয়েছে। তাছাড়া ভারতীয় করোনা টিকা সার্ক এর হাত ধরে পাকিস্তানে পাঠাতেও প্রস্তুত দিল্লি।
ইসলামাবাদ ও দিল্লির মধ্যে সীমা বিবাদ শুরু হয় ১৯৪৭ সালের ২২ অক্টোবর থেকে। যখন পাকিস্থান আচমকা কাশ্মীর উপত্যকা দখলের জন্য সেনা পাঠায়। পাকিস্থানি সেনাদের রুখতে তৎকালীন কাশ্মীরের রাজা হারি সিং ভারতের প্রধান মন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর সাহায্য চান। যার ফলে ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সাল ১৯৪৯ সালে সংযুক্ত রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করায় যুদ্ধ শেষ হয়। এবং দুই দেশের মধ্যে ইউনাইটেড নেশন সিজফায়ার বর্ডার লাইন তৈরি হয়।১৯৭২ সালে সিমলা চুক্তির মাধ্যমে ওই বর্ডার লাইনই তৈরী হয় লাইন ওফ কন্ট্রোল এ।
ভারত পাক সীমা নিয়ে সিমলা সমঝোতা হলেও নিস্পতি হয়নি সীমানা বিবাদ। বার বার এল ও সি তে শান্তি ভঙ্গের চেষ্টা চালায় পাক সেনা। ভারত ও পাকিস্থান প্রায় ৭৭৬ কিমি সীমানা ভাগ করে। দীর্ঘদিন চলে আশা সীমা বিবাদের জেরে ভারতীয় তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে প্রাণ হারান ৫৬ থেকে ৬১ ভারতীয় সেনা ও ৫১ জন সাধারণ মানুষ। ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী ২২ সেনা ও ১১ সাধারণ মানুষ প্রাণ হারায়। কাশ্মীরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিষ্ক্রিয় হবার পর পাকিস্থানের সীমাতে আগ্রাসন বাড়তে থাকে। বিশ্ব মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যূতে দিল্লির বিপক্ষে অবস্থান করে ইমরান খানের সরকার। কিন্তু ভারতের বিদেশ নীতি সফল হওয়ায় বার বার সমালোচিত হতে হয় ইসলামাবাদকে।
ভারত এখন শক্তিশালী। দ্বিপক্ষীয় আগ্রাসন রুখতে সক্ষম, দুনিয়াতে বার বার প্রমাণ দিয়েছে ভারতীয় সেনা। তাই দক্ষিণ চীন সাগরে বেজিং এর জমি অধিগ্রহণ নীতি কাজ করলেও ভারতে বিপক্ষে তা সম্ভব নয়। তবে বিবাদ নিস্পত্তির কারণ শক্তিই হোক বা করোনা টিকা, সীমান্তে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি না হলেও, আপাতত শান্তির আশা থাকবে চিন ও পাকিস্থানের তরফে।