মৈনাক শর্মা
মার্কিন ও নাটোর সেনার সরে আসার পরই আফগানিস্থানে মাথা চাড়া দিয়েছে তালিবান। কাবুল থেকে শুরু করে কান্দাহার– গত কয়েক মাসে একাধিক বার গুলির লড়াইয়ের শিকার হয়েছেন আফগান বহু নাগরিক। তালিবানদের ভয়ে প্রায় হাজরেরও বেশি আফগান সেনা পালিয়ে যায় তাজিকিস্তানে, সামনে আসে এমনও ঘটনা। প্রায় ৭০ শতাংশ আফগানিস্থান দখলের দাবিও জানায় তালিবানরা। কাবুলের বিমান বন্দরে তুর্কী সেনা মোতায়েন করলেও একচুলও কমেনি তালিবান হামলা। এই অস্থির অবস্থাতে আফগানী ভবিষ্যত্ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ব মহলে।

সব শক্তির উদ্ভোবের পিছনে থাকে ইতিহাস। তেমনই আফগান ভবিষ্যত নিয়েও রয়েছে ফেলে আসা ইতিহাস। ১৯৭৯ সালে আফগান দখল করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। লক্ষ ছিলো কোনোক্রমেই পাকিস্থান দখল করে ভারত সাগরে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনা। কিন্তু সোভিয়েতকে দমনের জন্য মার্কিন মদতে গড়ে ওঠে তালিবান শক্তি। ফলে ১৯৮৯ সালের শুরুতেই আফগানিস্থান ছাড়তে বাধ্য হয় সংযুক্ত রাশিয়া। অন্যদিকে অধিক মাত্রায় শক্তি বাড়াতে থাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তালিবান গোষ্ঠী। ১৯৯২ সালে মধ্য এশিয়ার দেশগুলিকে তালিবানি শক্তি থেকে বাঁচাতে প্রয়োজন হয় বিশ্বের বড় দেশ গুলির সম্মিলিত ভাবে আফগান দখল করা। তৈরী করা হয় নর্দার্ন অ্যালান্স এর। লক্ষ ছিলো আফগানিস্থানের উত্তর ভাগকে তালিবান মুক্ত রাখা। ১৯৯৬ সালে এই চুক্তিতে যোগদান করে রাশিয়া, তাজাকিস্থান, তুর্কী, উজবেকিস্তান ও ইরানের সম্মিলিত সেনা। এই গোষ্ঠির নেপথ্যে সাহায্য ছিলো ভারতেরও।

কী হতে পারে আফগান ভবিষ্যত? কোনদিকে দিল্লির কূটনীতি?

ভবিষ্যতে গোটা আফগানিস্থান, তালিবান শক্তির নিয়ন্ত্রণে এলে পাক সরকারের মদতে ওয়াখান করিডোর দিয়ে তালিবানি হামলার শিকার হতে পারে ভারত। তাই আফগানিস্থানে আবার শান্তি ফেরাতে গড়তে হবে উত্তর জোটের মতো শক্তি। একসাথে আসতে হবে চিন রাশিয়া সহ ভারত ও আমেরিকাকে। ফলে এখন যেভাবে তালিবানদের পিছনে পাক মদতের অভিযোগ উঠছে, তাকে বিশ্বের দরবারে আরো বেশি প্রকট করার দায় রয়েছে ভারতের। না হলে পাকিস্তানের ইন্ধনে তালিবানরা আগামী দিনে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে ভারত সহ প্রতিবেশী দেশ গুলির জন্য।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version