কলকাতা ব্যুরো: গদি টলমল। অনাস্থা ভোটে হার একপ্রকার নিশ্চিত। আর এই পরিস্থিতিতে পূর্ব ঘোষিত জাতির উদ্দেশে ভাষণ বাতিল করলেন পাকিস্তানের প্রাধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাকিস্তানের স্থানীয় সময় সন্ধ্যে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে এই ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। পাকিস্তান তেহরিক-ইনসাফের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ফয়জল জাভেদ খান টুইট করে জানান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণ বাতিল করা হয়েছে।
এর আগে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রাশিদ জানান, জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বড় ঘোষণা করবেন ইমরান খান। কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে ইমরান কী বলেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহল তো বটেই, পাকিস্তানের আপামর মানুষের আগ্রহ ছিল। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি অভিযোগ করেন, পাক সরকার ফেলার ‘ষড়যন্ত্র’ করছে ‘বিদেশি শক্তি’। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ ইমরানের নাম করে এ কথা জানিয়েছেন। সোমবার পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশনে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শাহবাজ শরিফ। তার পরই বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) পর্যন্ত সভা মুলতুবি ঘোষণা করেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক হবে বলে জানান তিনি।
৩৪২ আসনের পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ম্যাজিক ফিগার ১৭২। ইমরানের নিজের দল ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সদস্য ১৫৫ জন। কিন্তু, পিটিআই-এর বেশ কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে ইমরানের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া বুধবার ইমরান সরকারের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি)-এর ৭ এবং বালুচিস্তান আওয়ামি পার্টি (বিএপি)-র ৫ সদস্য রয়েছেন। রবিবার সমর্থন প্রত্যাহারকারী জামহুরি ওয়াতন পার্টির রয়েছেন এক সদস্য।
পার্লামেন্টে অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার আগেই ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিতে পারেন। পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে এমনটাই গুঞ্জন। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকায়, সেই জল্পনা আরও জোরালো হয়। যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী এ দিন জানান, ইমরান খানের ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। শেষ বল পর্যন্ত তিনি খেলা চালিয়ে যাবেন।
তবে এমন পরিস্থিতিতে গদি বাঁচাতে মরিয়া ইমরান সোমবার তাঁর দলের পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়েছেন। ওই পদটি আর এক ‘বিক্ষুব্ধ সহযোগী’ পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ)-কে দেওয়ার জন্যই এমন পদক্ষেপ। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পিএমএল-কিউ-এর সদস্য সংখ্যা ৫। পরিস্থিতি যখন এতটাই জটিল তখনই জাতির উদ্দেশে ভাষণে বড় ঘোষণার কথা শুনিয়েছিল ইমরানের দল। কিন্তু, দেখা গেলো ভাষণের কিছু আগেই তা বাতিল করে দিলেন স্বয়ং প্রাক্তন পাক- ক্রিকেট অধিনায়ক।