কলকাতা ব্যুরো: বিপদের সময় দেশ ছেড়ে পালানোয় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন। মুখরক্ষা করতে নিজের ‘অসহায়তা’ তুলে ধরার চেষ্টা করলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। দাবি করলেন, এমন অবস্থায় দেশ ছেড়েছেন যে পা থেকে চটি খোলার সুযোগও পাননি। সেইসঙ্গে আফগানিস্তানের কোষাগার থেকে অর্থ নিয়ে পালানোর যে অভিযোগ উঠেছিল, সেই অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছেন ঘানি।
সোমবারই সংযুক্ত আরব আমিরশাহির তরফে জানানো হয়েছে, ‘মানবতার খাতিরে’ আশ্রয় দেওয়া হয়েছে ঘানি এবং তাঁর পরিবারকে। তারপর ফেসবুকে একটি ভিডিয়োবার্তায় দাবি করেন, একটি আফগান পোশাক, একটি গেঞ্জি এবং চটি পরেই ‘আফগানিস্তান’ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘আমায় এমনভাবে আফগানিস্তান থেকে তাড়ানো হয়েছিল যে আমি পা থেকে চটি খুলে বুট গলানোরও সুযোগ পাইনি।’
গত রবিবার তালিবান কাবুল দখল করে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান ঘানি। তা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন। তাজাকিস্তানে থাকা আফগান রাষ্ট্রদূত তো দাবি করেন, দেশের কোষাগার থেকে ১৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করে পালিয়েছেন ঘানি। যদিও বুধবার ঘুরিয়ে সেই অভিযোগ খারিজ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। দাবি করেন, ‘খালি হাতে’ সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে এসেছেন তিনি। বলেন, ‘গত কয়েকদিনে টাকা লেনদেনের যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
প্রাথমিকভাবে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছিল, আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে তাজাকিস্তান বা উজবেকিস্তান বা ওমানে লুকিয়ে আছেন ঘানি। যিনি নিজের কয়েকজন অনুগতদের সঙ্গে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। নাম গোপন রাখার শর্তে দুই আফগান আধিকারিক জানিয়েছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লা মোহিব এবং এক ঘনিষ্ঠ আছেন। তারইমধ্যে ফেসবুক পোস্টে নিজের দেশ ছাড়ার কারণের সাফাই দিয়েছিলেন। দাবি করেছিলেন, রক্তবন্যা এড়ানোর জন্য দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে সেই একইসুরে ঘানি বলেছেন, ‘আপাতত আমি আরবশাহিতে আছি। যাতে রক্তবন্যা এবং বিশৃঙ্খলা থেমে যায়।’ সঙ্গে বলেন, ‘আমি যদি ওখানে (কাবুলে) থাকতাম, তাহলে আফগানিস্তানের একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে আবারও আফগানদের চোখের সামনে ঝুলিয়ে দেওয়া হত।’ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাজিবুল্লাকে ঝুলিয়ে খুন করেছিল তালিবান।