কলকাতা ব্যুরো: সুভাষ সরোবরে ছট পুজো করতে দেওয়ার রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিল হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টে ও রাজ্যের আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, রবীন্দ্র সরোবরে ছট পূজো না করার ব্যাপারে জাতীয় পরিবেশ আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাই বহাল থাকবে। ফলে বৃহস্পতিবার দুই আদালতে একই ইস্যুতে জোড়া মামলায় সুবিধা হলো না সরকারের। তাই রাত পোহালেই ছট পুজোর আয়োজনের জন্য বিকল্প জলাশয়ের পরিকাঠামো গড়ার কাজেই এখন বাড়তি নজর দিল প্রশাসন। একইসঙ্গে এই জলাশয়গুলিতে কোনো ভাবে যাতে পুজো করার জন্য কেউ ঢুকে পরে আদালতের নির্দেশ ভঙ্গ না করে, তা নিশ্চিত করতে জোর কদমে চলছে ঘেরার কাজ।

এদিন সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি ওঠে বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চে। সেখানে রাজ্য সরকারের তরফ কে এম ডি এ আবেদন করেছিল, জাতীয় পরিবেশ আদালত রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো করায় যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, এ বছরের জন্য তা মকুব করে দেওয়া হোক। যদিও দু’বছর আগে পরিবেশ আদালত ওই নির্দেশ দেওয়ার পরে গত বছরেও ‘শেষ সুযোগ’ হিসেবে ছট পুজো আয়োজনে সুযোগ পেয়েছিল রাজ্য।


এ বছরেও জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ এবারের মত কার্যকর না করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাজ্য সরকার। কিন্তু প্রথমবার আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। তাতে অবশ্য হতোদ্যম না হয়ে ফের একই আবেদন জানায় রাজ্য। কিন্তু এদিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, দু’বছর আগে যে নির্দেশ জাতীয় পরিবেশ আদালত দিয়েছে, তা কার্যকর না করার আর কোনো কারণ নেই। ফলে রবীন্দ্র সরোবরে এবার কোনভাবেই আর ছট পুজোর অনুমতি দেওয়া যাবে না।
এদিকে গত ১০ নভেম্বর ছট পুজোর ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ আরোপ করতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্র সরোবরের সঙ্গেই সুভাষ সরোবরে ও ছট পুজোর আয়োজন করা যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্য সরকার হাইকোর্টকে আবেদন করে। আদালত জানায়, কলকাতা শহরের দুই প্রান্তে দুটি জলাশয় অতি গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ বাঁচাতে যে নির্দেশ জাতীয় পরিবেশ আদালত রবীন্দ্র সরোবরের ক্ষেত্রে জারি করেছে, সেই একই নির্দেশ জারি হওয়া উচিত সুভাষ সরোবরের ক্ষেত্রেও। তাই কোনভাবেই এবার থেকে আর সুভাষ সরোবর ছট পুজোর জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।


আদালতের এই রায় প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে কোনমতে জলাশয় ভিড় না করতে আবেদন করেন। একই সঙ্গে মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আদালতের রায় শিরোধার্য। আমরা আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে তা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করব।
গত কয়েকদিন ধরেই রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবর এবার যে ছট পুজো করতে দেবে না আদালত তার আঁচ পেয়ে, পুরসভা সেখানে ঘেরার কাজ শুরু করেছিল। যেখানে যত ফাঁক-ফোকর রয়েছে, যেখান দিয়ে জলাশয়গুলোতে ঢুকে পড়া যায়, সেগুলিকে বন্ধ করতে টিন আর বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছিল। আর এদিন দুই আদালত থেকে একইরকম রায় ঘোষণার পর সেই কাজে আরো গতি বাড়ায় পুরসভা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version