কলকাতা ব্যুরো: কলকাতা পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়। রাজ্যের পুলিশকে দিয়েই ভোট করানোর নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এদিন হাইকোর্ট জানায় ইতিমধ্যেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় ভোটারদের মনোবল বাড়াতে কি করছেন? যা যা প্রয়োজন সেগুলি করুন। তবে হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এদিনই সুপ্রিম কোর্টে মামলার আবেদন করে বিজেপি। যদিও শুক্রবারের পর থেকে সুপ্রিম কোর্টে শীতকালীন ছুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। শনিবার এমনিতেই সুপ্রিম কোর্ট ছুটি। এই অবস্থায় মামলাটি আদতে শীর্ষ আদালত গ্রহণ করে শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ বসাবে কিনা, তা শনিবারই বোঝা যাবে।

এছাড়া স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে পরিকল্পনা মফিক রুট মার্চ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আর সেই নির্দেশ মতোই শুক্রবার বিকেল থেকেই কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ শহরের স্পর্শকাতর এলাকায় রুট মার্চ শুরু করে।

সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় নাকা চেকিং। আশপাশের জেলাগুলো থেকে কলকাতায় ঢোকার ও বেরোনোর যাবতীয় গাড়িতে চলে তল্লাশি। চাঁদনি চক, বউ বাজার, শ্যামবাজারের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় দেখা গিয়েছে রুট মার্চের ছবি।  

পাশাপাশি ১৪ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট প্রতিটি বুথে এবং গণনা কেন্দ্রে সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। তবে নির্বাচন চলাকালীন যদি কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার জন্য দায়ী থাকবে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে ডিজি ও সিপি। আবেদনকারীকে এব্যাপারে সাহায্য করতে হবে। নির্বাচন কমিশন কে যতদ্রুত সম্ভব ভোটারদের মনোবল ফিরিয়ে আনতে আলোচনা করে তা কার্যকর করতে হবে। আগামী ২৩ তারিখ এনিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে।

বিজেপির করা মামলার আজ শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চেও খারিজ হয়ে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর আর্জি। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় বিজেপি। তবে সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে।

তবে অন্তর্বর্তী নির্দেশে স্পষ্ট, নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনও ঘটনায় নজর রাখবে আদালত। আগামী ২৩ ডিসেম্বর অর্থাৎ কলকাতার পুরভোট মিটে যাওয়ার পর আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। এ ছাড়া পুরভোটের আগে কমিশনকে পুলিশের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকে বসতে হবে।

এ দিন আদালতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, বুথে সিসিটিভি রাখা হচ্ছে। একাধিকবার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক হয়েছে। পুরভোটে বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

আইনজীবী বলেন, ‘বুথে একজন সশস্ত্র পুলিশ থাকছেন। কমিশন আশ্বাস দিচ্ছে, কোনও সন্ত্রাস হবে না।’ সে কথা শুনে প্রধান বিচারপতি মনে করিয়ে দেন, এখানে ভোটারদের ভয় পাওয়া এবং সন্ত্রাসের ইতিহাস আছে। সে বিষয়ে জবাব দিতে গিয়ে কমিশনের তরফে আশ্বস্ত করা হয় অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তার নিষ্পত্তি করা হবে। পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানানো হয় কমিশনের তরফে। আইনজীবী বলেন, ‘কারও অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কিছু হয় না’।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version