কলকাতা ব্যুরো: সিবিআই নয়, স্কুল কর্মী নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিতে প্রস্তাব রাজ্যের। সেই আবেদনে সায় দিল মামলকরীও। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোয় নির্দেশ দেবে হাইকোর্ট। এমন আরো ৫০০ জনকে জাল নথি ব্যাবহার করে নিয়োগ করা হয়েছে বলে সেই সংক্রান্ত নথি এদিন আদালতের গোচরে অন হয়। আদালত মনে করছে, দালাল বা অফিসারদের টাকা দিয়ে এই চাকরির জাল অনেক গভীর।
প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও কী ভাবে নিয়োগ করা হলো? তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে গ্রুপ- ডি পদে নিয়োগ নিয়ে হওয়া সেই মামলায় বুধবার ২৫ জন কর্মীর বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ডিআই-কে এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলেছেন বিচারপতি। বুধবার গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলার শুনানিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়, কী ভাবে ওই ২৫ জনের নিয়োগ হল, তার ব্যাখ্যা নেই তাদের কাছে। এমন কি এই সুপারিশ তাদের নয় বলেও স্পষ্ট করে দেয় কমিশন।
এর আগে হাইকোর্ট এই দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই কে ডাকার হুশিয়ারি দিয়েছিল। এদিন সিবিআই য়ের পরিবর্তে অবসর প্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের প্রস্তাব দেয় রাজ্যই। এরপরই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। গত ২ বছর ধরে চাকরি করে আসছে ওই কর্মীরা।
মঙ্গলবার এই মামলায় নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আর বুধবার সকালেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিবকে তলব করা হয়েছিল আদালতের তরফে। সেই মতো উপস্থিতও হন সচিব। সিবিআই, সিআইএসএফ দিয়ে কমিশনের অফিস ঘিরে যাতে কোনো কর্মী। এই সংক্রান্ত নথি আর নষ্ট না করতে পারে না কম্পিউটার ব্যাবহার করে তথ্য প্রমাণ লোপাট না করতে পারে সেই নির্দেশ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি।
এদিন দুপুর ৩ টে পর্যন্ত কমিশনকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল। ৩ টের পর আদালতে কমিশনের তরফ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, কমিশন এই ২৫ জনের নিয়োগের বিষয়ে কিছু জানে না। এমনকি কমিশনের নামের সঙ্গে এই ধরনের অভিযোগ জুড়ে যাক, সেটা কমিশনও চায় না বলে জানান তিনি। কমিশনের তরফে বলা হয়, কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবিও জানান তাঁরা। যদিও এ দিন কাউকেই তদন্তভার দেওয়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
২ বছর ধরে কী ভাবে চাকরি করছে, কার মারফৎ চাকরি পেলেন ওই ২৫ জন, সেই খবর কমিশনের কাছেও যেহেতু নেই তাই আপাতত ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জানা গিয়েছে, মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও টাকা দেওয়া হবে না। তাঁরা কী ভাবে চাকরি পেলেন, তা তাঁদের বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য আগামী দিনে তাদের মামলায় যুক্ত করার ও নির্দেশ দেন বিচারপতি।
কমিশনকে এদিন হলফনামা দিতে বলা হয়েছিল। হলফনামায় কমিশন জানিয়েছে, তারা এই চাকরির সুপারিশ করেনি। কমিশনের কোনও আঞ্চলিক অফিস থেকে চাকরি হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ দিন মামলাকারী আইনজীবীরা আদালতে জানান, শুধু ২৫ জন নয়, এরকম অন্তত ৫০০ জন রয়েছে, যাদের নিয়োগ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা নেই।