এক নজরে

#RampurhatCrime: রামপুরহাট কাণ্ডে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে SIT-এর রিপোর্ট তলব

By admin

March 23, 2022

কলকাতা ব্যুরো: রামপুরহাট কাণ্ড নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট তলব করল আদালত। বগটুই গ্রামের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ৭টি ভিন্নভিন্ন পিটিশন দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। বুধবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে একসঙ্গে সবক’টি আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিকে বগটুই কান্ডে তদন্তভার নিতে কি আদৌ প্রস্তুত সিবিআই বা এনআইএ? বুধবার কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে প্রশ্ন করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। তদন্ত করতে যে সিবিআই প্রস্তুত, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই বগটুই কান্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছে।  আদালতের এদিনের পর্যবেক্ষণের পর এই বিষয়টি আরও জোরাল হলো। 

বগটুই কান্ডে আজ হাইকোর্ট যে নির্দেশগুলি দিয়েছে

১) ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাবে সঙ্গে ফুটেজ বেশি রাখতে  DVR, যাতে সব অ্যাঙ্গেল ধরা পরে, সব সময় রেকর্ডিং করতে হবে, যত দিন না পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

২) দিল্লি CFSL কে নির্দেশ যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থল থেকে ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহ করবে।

৩) ডিজি ও পূর্ব বর্ধমানের জেলা জজের সামনে সমনয় রেখে সাক্ষী নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করবে রাজ্য। সিসিটিভি বসানোর ক্ষেত্রেও জেলা জজের সামনে করতে হবে।

৪) পি এম হয়ে থাকলে তার ভিডিও ও রিপোর্ট জমা দিতে হবে। যদি না হয় তাও জানাতে হবে।

৫) তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট আনতে হবে।

এদিন পর্যবেক্ষণে বিচারপতিরা জানান, ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে রাজ্যকে প্রথমে রিপোর্ট পেশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে এদিন আদালত একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটকে রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে। এই ঘটনায় তদন্ত কতটা এগিয়েছে, তা খতিয়ে দেখতেই এই রিপোর্ট তলব করলো আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুর দু’টোর মধ্যে আদালতে জমা করতে হবে রিপোর্ট। কেস ডায়রি নিয়ে কোর্টে হাজির হতে হবে তদন্তকারী আধিকারিককে। 
এদিন হাইকোর্ট আরও বলেছে, বগটুই গ্রামের ঘটনাস্থলে সিসিটিভি বসাতে হবে। পূর্ব বর্ধমানের জেলা জজ তার দেখভাল করবেন। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ছবি তুলে তা আদালতে জমা করতে হবে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ও ফটো সংরক্ষণও করতে হবে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক দলকে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ উদ্ধার করে পরীক্ষায় পাঠাতে হবে।
এদিন আদালতে গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির আইনজীবীরা। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হাই কোর্টের নির্দেশ, পূর্ব বর্ধমান জেলা জজের সঙ্গে আলোচনা করে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজিকে অবিলম্বে সাক্ষীদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। ঘটনায় মৃতদের ময়নাতদন্তের সময় করতে হবে ভিডিওগ্রাফি। 

ইতিমধ্যেই বগটুই কান্ডে ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পেশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁরা লুকিয়ে ছিলেন গোপন আস্তানায়, বুধবার সকালে বেরিয়ে এসে তাঁরা করছেন ভয়ঙ্কর অভিযোগ। দমকলকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় প্রথমে। দীর্ঘক্ষণ গ্রামে ঢুকতেই পারেনি দমকল। এক্ষেত্রে প্রশ্ন, দমকলকে কারা আটকেছিল? প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশের সামনেই ভাদু বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে। কেন দর্শক পুলিশ? সে প্রশ্নও থাকছে। আপাতত বৃহস্পতিবারই বগটুই যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে বিরোধীদের চক্রান্তের তত্ত্বই খাঁড়া করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত. বগটুই গ্রামের ঘটনার দিকে নজর রাখছে জাতীয় মহিলা কমিশনও। রাজ্যকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ।  উল্লেখ্য, সোমবার রাতে রামপুরহাটে বোমা মেরে খুন করা হয় তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখকে। এর পরই সেই রাতে বগটুই গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যেখানে অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি।