কলকাতা ব্যুরো: (প্রতীকী ছবি) গণধর্ষণ ও নির্যাতিতার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশ যখন তোলপাড়, তখন এক সাংবাদিকের ফোন ট্যাপ করে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার অডিও রেকর্ড বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হল। কে বা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তা নিয়ে সরকারের কাছে কৈফিয়ত তলব করল ইন্ডিয়া টুডে। তাদের সংস্থার সাংবাদিক তনুশ্রী পান্ডে হাথরাস এ ধর্ষণ ও তরুনীর মৃত্যুর ঘটনা কভার করছেন। তার সঙ্গে মৃতার ভাইয়ের টেলিফোনে কথাবার্তার অডিও টেপ বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে সাংবাদিক ভাইকে বলছেন, তার বাবার একটি ভিডিও বক্তব্য তাদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ করে পাঠাতে। পরিবারটি যে এখনো ভয়ে আছে, তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে, এই বক্তব্য রেকর্ড করে পাঠাতে বলা হইছিলো।

এ রাজ্যেও সাংবাদিকদের ফোন ট্যাপ এর ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রথমদিকে জঙ্গলমহলে মাওবাদী উপদ্রব যখন ছিল, তখন বেশ কিছু সাংবাদিকের সঙ্গে প্রায় নিয়মিতই ফোনে কথা বলতেন মাওবাদী নেতা কিষেনজি। আবার বেশ কিছু অন্যান্য মাওবাদী নেতাও সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। ফলে তাদের বেশ কয়েকজনের ফোন ট্যাপের অভিযোগ উঠেছিল। জঙ্গলমহলে কর্মরত কিছু পুলিশ অফিসারের ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ শোনা যেত। এমনকি বিরোধী রাজনীতি করার সময় মমতা বন্দোপাধ্যায়ও তাঁর ফোনে আড়িপাতা হয় বলে অভিযোগ করতেন প্রায়ই।

আবার সরকার বদলের পরেও সে অভিযোগ এখনো কানাঘুষো য় শোনা যায়। এমনকি কিছুদিন আগেও ক্রাইম কনফারেন্সে এক পুলিশ কমিশনার, তার কোনও থানার ওসিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা কম বলতে পরামর্শ দিচ্ছেন, এমনটাও শোনা যেত। একটা সময় কলকাতায় পুলিশ কর্তারা থেকে থানার ওসি পর্যন্ত, সাংবাদিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চাইতেন না। কারণ, তাদের সকলেরই আতঙ্ক ছিল, ফোন নজরদারির ভয়ে। এখনো মাঝে মাঝেই বিরোধী দল ফোন ট্যাপের অভিযোগ তোলে। কিন্তু শুধু অভিযোগ, কানাঘুষো বা জল্পনা নয়, হাথরাস কান্ডকে কেন্দ্র করে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের ফোন ট্যাপের অভিযোগ এখন বড় হয়ে দাঁড়ালো।

যদিও টেলিভিশন সাক্ষাতকারে বিজেপির নেতা সাফাই দিতে গিয়ে বলেছেন, ওই সাংবাদিক বিকৃত সংবাদ তৈরি করছিলেন। কিন্তু ইন্ডিয়া টুডের লিখিত প্রশ্নে বলা হয়েছে, কোন আইনে একজন সাংবাদিক এবং এক নির্যাতিতার পরিবারের ফোন ট্যাগ করা হলো এবং সেই রেকর্ডিং ছড়িয়ে দেওয়া হল জনসমক্ষে তার জবাব কে দেবে?

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version