কলকাতা ব্যুরো: গোর্খাল্যান্ডের দাবি ফের প্রতিষ্ঠিত করতে বিজেপির বর্তমান দার্জিলিংয়ের সাংসদকে বিতাড়িত করা ডাক দিল অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ। ওই সংগঠনের তরফে গত কয়েকদিন ধরেই দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় সাংসদের বিরুদ্ধে পোস্টারিং শুরু হয়েছিল। সংগঠনের নেতাদের দাবি, পাহাড়ের মানুষের মূল লড়াই, গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে। তা মানার ব্যাপারে কোনো উৎসাহ দেখাচ্ছেন না বর্তমান সাংসদ। তাই তার সাংসদ পদ থাকার কোন অধিকার নেই।
মাঝে বছর দেড়েক দার্জিলিং পাহাড় শান্ত রয়েছে। বিমল গুরুং পাহাড়ে ফিরলেও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে এখনো তেমন কোনো আন্দোলনের গন্ধ নেই। এই অবস্থায় বিমল গুরুংদের বিরোধী অখিল ভারতীয় গোর্খা লীগের তোলা পুরনো দাবি আবার পাহাড়ে নতুন করে অশান্তি ছড়াবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও পাহাড়ের রাজনীতি সম্পর্কে অভিজ্ঞদের বক্তব্য, মদন তামাংয়ের নেতৃত্বে একসময় গোর্খা লিগ যথেষ্টই প্রভাবশালী ছিল দার্জিলিঙে। কিন্তু তাকে খুন করার পর তার স্ত্রী ভারতী টামাংয়ের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি দলের জোট করলেও, লীগের খুব বেশি প্রভাব এখনো আর পাহাড় জুড়ে নেই। যদিও গোর্খাল্যান্ড দাবি নেপালি ভাসি যেকোনো পাহাড়বাসীর একটা আবেগ এবং সেই আবেগের জন্যই গত প্রায় চার দশক ধরে পাহাড়ে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন তৈরি হয়েছে।
কখনো শান্তিপূর্ণভাবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে শর্তসাপেক্ষে কিছু আদায় অথবা ভাঙচুর আগুন এর রাজনীতি, পাহাড় কিন্তু গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে এখনও এক চুল নড়েনি। এই অবস্থায় রাজু বিস্তের বিরুদ্ধে পাহাড়ে নতুন করে আন্দোলনে সরাসরি বিজেপি বিরোধী রাস্তায় হাঁটছে লিগ। যা বর্তমানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চারও পথ। সেই একই পথের পথিক এখন পাহাড়ে দুই মেরুতে থাকা দুপক্ষ। কারণ দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বিজেপির সঙ্গে জোট করে কাটিয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবি আদায় না হাওয়া য় বিমল গুরুং রা গত বছর পুজোর আগে তৃণমূলের পায়ে ডাইভ দিয়েছে।
আবার এখন বিজেপি বিরোধী সুর যদি বেশি চড়ে যায় সে ক্ষেত্রে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নীরব থাকলে, আন্দোলনের রাশ লীগের হাতে চলে যেতে পারে, সেই আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের জন্য এখন থেকেই পাহাড়ে অশান্তির সলতে পাকানো কাজ শুরু হলো, কিনা তা সময়ই বলবে।