কলকাতা ব্যুরো: গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে কর্পোরেট কর্তা সহ জোড়া খুনের ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লো মূল অভিযুক্ত। ডায়মন্ডহারবার থেকে গ্রেফতার করা হলো অভিযুক্ত মিঠু হালদারকে। কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকির বাড়িতে আয়ার কাজ করতেন ধৃত এই মহিলা। যদিও এই ঘটনায় মিঠুর ছেলে ভিকির বড় ভূমিকা রয়েছে বলেই মনে করছে লালবাজার। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই ডায়মন্ডহারবারে যায় গোয়েন্দা দল। রাতেই মিঠুর ভাড়াবাড়িতে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহ দানা বাঁধে তদন্তকারীদের মনে। বুধবার ছোট ছেলে ও ভাই সহ মিঠুকে নিয়ে আসা হয় লালবাজারে। মিঠুর ছেলে এবং ভাইকেও ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একই প্রশ্নের বিভিন্ন উত্তর মেলায় অসঙ্গতি স্পষ্ট হয়। অবশেষে মিঠুকে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃত মিঠু হালদারের বড় ছেলে ভিকি পলাতক। তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। বিজয়া দশমীর পরের রাতে মিঠুকে রক্তমাখা জামা কলের জলে ধুতে দেখেছিলেন বাড়ির মালিক। এ প্রসঙ্গে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মিঠু জানায়, ছেলে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিল, তাই জামা ধুয়ে রক্ত পরিষ্কারের চেষ্টা করছিলেন তিনি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বাড়ি বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকি। যে বিজ্ঞাপন দেখে ভিকি বেশ কয়েকবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন বলেও জানা যাচ্ছে। আর যা থেকেই গোয়েন্দাদের ধারণা মিঠু ও তাঁর বড় ছেলে মিলে পরিকল্পনা করেই সম্ভবত খুন করেছিল সুবীরকে। খুনের মোটিভও কার্যত স্পষ্ট গোয়েন্দাদের কাছে। কী ধরনের ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে, তারও একটা আন্দাজ পেয়েছেন তদন্তকরীরা।
পুলিশ সূত্রে দাবি, খুনের পর রক্তাক্ত ধারাল অস্ত্রটি আততায়ীরা পাশ বালিশের ওপর রেখেছিল। পরে আততায়ীরা ধারাল অস্ত্রটি সরিয়ে নিয়ে গেলেও, বালিশ থেকে রক্তের ছাপ মোছা সম্ভব হয়নি। সেই ছাপ দেখেই অস্ত্র সম্পর্কে একটি ধারণা হয় পুলিশের। তদন্তে উঠে এসেছে, খুনি সম্ভবত ডানহাতি। খুনের আগে আততায়ীদের সঙ্গে যে কর্পোরেট কর্তা ও তাঁর গাড়িচালকের ধস্তাধস্তি হয়েছিল, তার প্রমাণও মিলেছে।