কলকাতা ব্যুরো: ইয়াসের পরে মাস পেরিয়ে গিয়েছে। মাঝে দুটো ভরা কোটাল পার করেছে সুন্দরবন। কিন্তু এখনো ইয়াসের ক্ষত মুছতে পারেনি নিতাই দাস, সাদেক মোল্লারা। কারোর ভেঙে পড়া বাড়ির প্রায় কিছুই মেরামত হয়নি, কেউ আবার কোনরকমে মাথা গোঁজার জায়গাটুকু করলেও, গোয়াল ঘর এখনো ভেঙে পড়ে রয়েছে। কর্মসংস্থান বলতে কিছুই নেই। কলকাতায় করোনা আর লকডাউনের মধ্যেও দিনে ১২ – ১৪ ঘন্টা যারা শুধু ল্যাপটপ, কম্পিউটারে মুখ গুজে কাজ করেছিলেন, তেমনি কিছু যুবক শনিবার আখো দেখা হাল দেখে এলেন কাকদ্বীপের নারায়ণপুর গ্রামে গিয়ে।নদীর ধারে কয়েকশো মানুষের বাস। ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকাটা এখন ধীরে ধীরে নিজেকে পুরনো অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সেখানেই নিজেদের সামর্থ্য মতো কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা কর্মীরা। মূলত পাশে থাকার লক্ষ্য নিয়েই ওরা গত মাস খানেক ধরেই পরিকল্পনা করেছিলেন সুন্দরবন পৌঁছনোর। তারপরে অনেক পরিকল্পনা শেষে পৌঁছে যাওয়া একেবারে দুর্যোগের ভরকেন্দ্র নারায়নপুর।কলকাতার কলকাতার সুখ্যাত প্রিজম হাব অনলাইন সলিউশন সংস্থার কর্মীরা ও তার সাথে স্পিরিট অফ কলকাতা, রং মশাল, টাচ –ফোর মাস্কেটিয়ার্স একত্রিত পৌঁছে যায় কাকদ্বীপ।
কাকদ্বীপ থানার ওসি শিবু ঘোষ ফোনে সাহায্য করতে হবে শুনি মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে যাবতীয় ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। এদিন হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মন্টু রাম পাখিরা। আর নিজের হাজার কাজের মাঝেও তার খেয়াল ছিলো নারায়ন পুরের মানুষ তেমন সাহায্য পাচ্ছেন না, সাগর বা মৌসুনি নিয়ে মিডিয়ার মাতামাতিতে। কাকদ্বীপের মহকুমা পুলিশ অফিসার অনিল রায়ই এই জায়গার মানুষকে সাহায্য করার জন্য পিছন থেকে উৎসাহ দেন।
চিড়ে, মুড়ি, ছাতু, জলের বোতল বা পোশাক-পরিচ্ছদ যাদের কাছে পৌঁছে দিলেন ওরা, তাদের কতটা প্রয়োজন মিটলো তা জানা নেই, তবে এই লকডাউনে নিজেরা আর্থিক এবং মানসিকভাবে চাপের মধ্যে থেকেও সংস্থা কর্মীরা এদিন যে তৃপ্তি পেলেন, তা তাদের কাছে আগামী দিনে মানুষের পাশে থাকার জন্য একটা বড় অক্সিজেন সিলিন্ডারের মতো।