কলকাতা ব্যুরো: বসিরহাটের মাটিয়া ধর্ষণ-কাণ্ডে ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করলেন ফরেনসিক সদস্যরা। ফরেনসিক আধিকারিক অভিজিৎ মণ্ডলের নেতৃত্বে চার সদস্যের দল বুধবার মাটিয়া গ্রামে যান। দলের সদস্যরা প্রায় একঘণ্টা ঘটনাস্থলে ছিলেন। সেখান থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা, কথা বলেন স্থানীয় বেশ কিছু বেশ বাসিন্দার সঙ্গেও।
গত ২৪ মার্চ বসিরহাটের মাটিয়ায় ১১ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। উপহারের লোভ দেখিয়ে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মাটিয়া গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতা আপাতত আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। সংকটজনক অবস্থায় এইচডিএউতে ভর্তি আছে সে। ধর্ষণ-কাণ্ডে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বসিরহাট থানার পুলিস। এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চেয়ে মামলা হয়।
মাটিয়া গ্রামের ওই কিশোরী দিদির বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। পুলিস জানায়, দিদির বাড়ির এক আত্মীয়া (সম্পর্কে কিশোরীর পিসি) পাড়ার জনৈক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরির প্রস্তাব দেয় কিশোরীকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই যুবকের সঙ্গে কিশোরীর দেখাও করিয়ে দেয় সেই পিসি। তারপরই উপহার দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ওই যুবক এক নির্জন স্থানে নিয়ে যায় কিশোরীকে। সেখানে পাশবিক অত্যাচার চালানো হয় কিশোরীর উপর। নিখোঁজ থাকার এক দিন পর রক্তাক্ত অবস্থায় এক পার্কের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় কিশোরীকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই ওই যুবক ও পিসিকে গ্রেফতার করে পুলিস। ৬দিনের পুলিস হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তাদের। ওই কিশোরীর পরিবার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন জানিয়েছে। ধৃত মহিলার বোনও অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তিনি দিদির কড়া শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, মহিলা হয়ে ও একটা শিশুর প্রতি এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারল, ভাবতে পারছি না। আমি ওর এমন শাস্তি চাই, যাতে ভবিষ্যতে ও কখনও আর এ ধরনের অপরাধ না করতে পারে।
ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই আন্দোলনে নেমেছে বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি। এলাকায় তিন দলই বিক্ষোভ দেখায়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান, মাটিয়ায় এবং আরজিকর হাসপাতালে মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দিচ্ছে না পুলিস। তিনি এই ঘটনার সঙ্গে দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডেরও তুলনা টেনে আনেন।