কলকাতা ব্যুরো: আরব্য রজনীর আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের গল্প মনে আছে? সেই আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ! যা কিনা ১৭০০ সাল নাগাদ প্রথম পাওয়া যায় গল্পে। সেই প্রদীপ বিক্রি হলো উত্তরপ্রদেশের মেরটে। কিনলেন কে?। লন্ডন থেকে উত্তরপ্রদেশে ফেরা এক চিকিৎসক। দাম দিলেন কত? বেশি নয়। মাত্র আড়াই কোটি টাকা।
বিশ্বাস হচ্ছে না? একেবারেই ঠিক পড়ছেন। আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ। তাকে বিক্রি করেছেন সেখানকার খাইয়ার নগর এলাকার ব্রহ্মপুরী পুলিশ থানার এলাকার দুই প্রতারক। ডাক্তার লাইক খান এখন সেই আশ্চর্য প্রদীপ থানায় দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রতারকদের বিরুদ্ধে।
লন্ডন থেকে ফেরত ডাক্তারবাবু ২০১৮ সালে মেরটে তার চেম্বারে চিকিৎসা করার সময় সামিনা নামে এক মহিলা তাকে দেখাতে আসেন। সেই মহিলার অপারেশনের পর নিয়মিত ড্রেসিং করার দরকার হতো। সেই সূত্রেই লন্ডন ফেরত ডাক্তারবাবু মাঝেমাঝেই ওই মহিলার বাড়িতে যেতেন। সেখানেই আলাপ হলো সেই মহিলার স্বামী ইসলামউদ্দিনের সঙ্গে। ইসলামউদ্দিন নাকি বড় তান্ত্রিক।
কথায় কথায় ইসলাম উদ্দিন ডাক্তারবাবুকে কোটিপতি বানিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখালেন। শেষ নয় সেখানেই। তিনি বললেন, ডাক্তার বাবুর সঙ্গে থাকবে এক জিন। সেই জিনকে যা তিনি বলবেন সে তাই করবে। এরপর আরও নানা গল্পের পর সেই তান্ত্রিক নিয়ে এলো, আলাদিন কা চিরাগ বা আলাদিনের-আশ্চর্য-প্রদীপ। এতদিন যা ছিল আরব্য উপন্যাসের, তা-ই বাস্তবে চলে এলো উত্তরপ্রদেশে! সৌজন্যে বিলেত ফেরত ডাক্তার।
সেই প্রদীপের মধ্যেই নাকি থাকে সেই জিন। ডাক্তারবাবু ধাপে ধাপে আড়াই কোটি টাকা দিয়ে কিনে ফেললেন সেই রূপকথার আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ।
কিন্তু আসলাম উদ্দিন তার বাড়িতে বসে যে জিন দেখায়, তা তো তার বাড়িতে আসে না। এবার বেঁকে বসলেন ডাক্তারবাবু। তার বাড়িতে জিনকে পাঠাতে হবে। কিন্তু আসলাম উদ্দিন বেকায়দায় পড়ে বলল, খবরদার তাহলেই বাড়িতে সব্বনাশ হবে। ডাক্তারবাবু বুঝলেন ইসলাম উদ্দিন তার বাড়িতে যে জিনকে দেখায় সে আসলে তার এক সাকরে দ। ডাক্তারবাবুর ততদিনে বিশ্বাস নষ্ট হতে শুরু করেছে। পরে দেখা গেল তিনি একেবারেই বোকা বনেছেন। আলাদিনের প্রদীপ বলে যা তাকে গছানো হয়েছে, তা স্রেফ পিতলের একটি পুরনো প্রদীপ ছাড়া আর কিছু নয়।
অভিযোগ করলেন তিনি থানায়। ব্রহ্মপুরী থানা ইসলাম উদ্দিন ও তার সাকরেদ আনিসকে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করেছে। যদিও জিনকে তারা এখনো মনে হয় বাগে আনতে পারেননি।
আর লন্ডন ফেরত ডাক্তারবাবু আলাদিনের-আশ্চর্য-প্রদীপ থানায় জমা দিয়েও আড়াই কোটি টাকার শোকে এখন মূহ্যমান।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version