কলকাতা ব্যুরো: তিন বছর ন মাস পর আবার ঘরে ফিরলেন মুকুল রায়। যদিও তার এই ঘরে ফেরা কতটা তার জন্য সম্মান বয়ে আনলো তা অবশ্য সময়ই বলবে। মুকুল রায় দলে ফেরা কতটা শক্তি বৃদ্ধি হল, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, মুকুল আমাদের ঘরের ছেলে। ওকে অনেক জোরজার করে, এজেন্সি দেখিয়ে, বিজেপি চাপ সৃষ্টি করেছিল। আমি দেখলাম, ওর শরীর অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছে। ফলে এখানে এসে ও মানসিকভাবে অনেক ভালো থাকবে। কারণ কোনো সুস্থ মানুষ বিজেপি করতে পারেনা। যোগ্য হিসেবেই যে দল তাকে আবার নিয়েছে, সে কথা সামনে স্বীকার না করে এদিন গোটা ব্যাপারটা মধ্যে মুকুলকে করুণা করার ইঙ্গিতই দিয়েছেন নেত্রী।
মুকুল রায়ের মতন একজন দক্ষ সংগঠককে দলে ফেরালেও প্রকাশ্যে যে তাকে এখনই খুব বেশি দল গুরুত্ব দিচ্ছে না, নেত্রীর প্রকট বক্তব্যে সে কথা স্পষ্ট। বারে বারেই মুকুল রায়ের দলে ফেরায় সংগঠন কতটা জল শক্তিশালী হবে, তা নিয়ে ঘুরে ফিরে এদিন প্রশ্ন করা হয়েছে মমতাকে। প্রতিবারই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, এক্ষেত্রে মুকুল রায়ের ভালো হয়েছে। পাশাপাশি তিনি এও বুঝিয়েছেন, মুকুলের মতো সর্বভারতীয় নেতা দল ছাড়াই, বিজেপির ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ২০২১ এর প্রবল চাপের ভোটে ২১৬ আসনে জিতে আসা মমতা ব্যানার্জি মানতে নারাজ যে মুকুল রায়ের মত দক্ষ সংগঠক ফিরে আসায়, তার দল আরো শক্তিশালী হবে। হয়তো প্রকাশ্যে এখনই তা বলছেন না, সেক্ষেত্রে দলে যে নেতারা এতদিন আছেন, তাদের মনোবলে চিড় ধরুক তার চান না, দলের শীর্ষ হিসেবে।
যদিও মমতা ব্যানার্জি ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই মুকুল রায়কে দ্রুত ঘরে ফিরিয়ে এনেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। কারণ সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে মমতা এখন নিজেকে প্রথমেই রাখতে চান। কিন্তু শুধু আন্দোলনে কাজ হবে না, সর্বভারতীয় বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনতে সলতে পাকানোর জন্য একজন দক্ষ সংগঠক দরকার। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মুকুল রায় সে ক্ষেত্রে যোগ্য নাম হতে পারেন। সেই কারণেই তাকে দলে টেনে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তাকে কাজ করানো লক্ষ্য হতে পারে তৃণমূলের। কারণ আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী ভোট এক পাত্রে ফেললে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে তৃণমূল নেত্রীর নাম সবার উপরে থাকবে বলেই ধারণা তৃণমূলের একটা বড় অংশের নেতাদের। সেখানেই মুকুল রায় হতে পারেন কিংমেকার, থুড়ি কুইনমেকার’।