কলকাতা ব্যুরো: দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আইনি স্বীকৃতি পেলেন যৌনকর্মীরা। দেহ ব্যবসাকে আর পাঁচটা সাধারণ কাজের মতো ‘পেশা’ হিসাবে স্বীকৃতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, যৌন পরিষেবা দেওয়াটাও আইনস্বীকৃত পেশা। যারা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত তাদেরও সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার আছে।

এবার থেকে যারা যৌন পরিষেবা দেয় বা যৌন কর্মী হিসাবে কাজ করে তাদের কোনওরকম হেনস্তা করা যাবে না। বা তাদের বিরুদ্ধে কোনওরকম অপরাধমূলক মামলাও দিতে পারবে না পুলিশ। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের সম্মানজনক জীবনের অধিকার আছে। যৌনকর্মীদেরও আইনের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি কোনও প্রাপ্তবয়স্ক যৌনকর্মী স্বেচ্ছায় কাউকে পরিষেবা দেয়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অপরাধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও, বিচারপতি বিআর গভই এবং বিচারপতি এএস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চ যৌনকর্মীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশিকা বেঁধে দিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, কোনও যৌনকর্মী কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার হলে, তাঁকে সবরকম আইনি সহায়তা দিতে হবে। কোনও পুলিশি অভিযানের সময় যৌনকর্মীদের পরিচয়ের গোপনীয়তার দিকে নজর রাখতে হবে। যৌনকর্মীদের অধিকারগুলি সম্পর্কে তাঁদের সচেতন করতে হবে। শুধু দেহ ব্যবসাকে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্য কোনও মহিলাকে তাঁর সন্তানের থেকে আলাদা করা যাবে না। কোনও শিশু পতিতালয়ে থাকছে মানেই তাঁকে পাচার করে আনা হয়েছে এটা ধরে নেওয়া যাবে না।

শীর্ষ আদালতের এই নয়া নির্দেশিকায় দেশের প্রায় ৯ লক্ষ যৌনকর্মী উপকৃত হবেন। বস্তুত দেশে দেহ ব্যবসা অবৈধ না হলেও পতিতালয় চালানো বা পতিতাবৃত্তিতে প্ররোচনা দেওয়া অপরাধ হিসাবে গণ্য হয়। এই আইনের জেরেই বহু যৌনকর্মীকে পরিষেবা দিতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হয়। তাছাড়া এই পেশার সঙ্গে যুক্তদের প্রতি সমাজের বক্রদৃষ্টি তো আছেই। শীর্ষ আদালতের নয়া গাইডলাইনে তাঁরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version