কলকাতা ব্যুরো: চারিদিকে রাজনীতির ঝড়ের মধ্যে একেবারে প্রায় নীরবে বড় কাজ করে ফেললেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। করোনার ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার তিনি হলেন কলকাতার প্রথম স্বেচ্ছাসেবী। স্বভাবতই এদিন সকালে রাজ্যপাল উদ্বোধন করার পর বিকেলে বেলেঘাটার নাই সেডে মেয়র হাজির হন। তাকে প্রথমে যাবতীয় বিষয়টি বুঝিয়ে দেন অধিকর্তা শান্তা দত্ত।
এরপরেই তাকে নিয়ে গিয়ে তার শরীরে ভ্যাকসিনের নমুনা প্রয়োগ করা হয়। তিনিও আর পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবীর মতই সহযোগিতা করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে। শুধুমাত্র তিনি যখন ভ্যাকসিনের নমুনা নিজের শরীরে নিয়েছিলেন, তখন গুচ্ছ গুচ্ছ ক্যামেরায় সেই ছবি ধরা পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা প্রচার হয়ে যায় সংবাদমাধ্যমে। আর সব সেরে তিনি বেরিয়ে এসে রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে ফেলেন।
স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তিনি এমন কাজে যুক্ত হতে পারায় আবার কেন্দ্রীয় সরকারের নাইসেড কর্তাদের ধন্যবাদ জানান। এমনকি তার শরীরে কোনও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ঘটনার আধ ঘণ্টা পরেও হচ্ছে না বলে তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেন। দিনের শেষে প্রায় নীরবেই একটা অন্য মাইলস্টোন মেয়র ছুড়ে ফেললেন বলে মনে করছেন তার শুভাকাঙ্খীরা।
তাদের মতে, শহরের মহানাগরিক হিসেবে তিনি যখন এমন একটা কাজে প্রথম নিজেকে নিয়োজিত করবেন, তার একটা ইতিবাচক প্রভাব নাগরিক সমাজের পড়বে। পাশাপাশি এই মুহূর্তে কেন্দ্র ও রাজ্য নানান ইস্যুতে সংঘাত জারি রয়েছে। এদিন সকালে রাজ্যপাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকলেও, সেখানে ছিলেন না রাজ্যের কোন স্বাস্থ্য কর্তা। আর কোন শহরের মেয়র বা মন্ত্রী এ দেশে অন্তত স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ভ্যাকসিন এর নমুনা নিজের শরীরে নিয়েছেন বলে নজির নেই। আর এ রাজ্যে তো নয়ই, না বিরোধী, না শাসক। সেই দিক দিয়ে ফিরহাদ হাকিম নিশ্চয়ই বাড়তি ইমেজ তৈরি করে ফেললেন।
এরই সঙ্গে রয়েছে, এই মুহূর্তে বিজেপি ও তৃণমূলের নানান রকম চাপানউতোর। সামগ্রিক এই অবস্থার মধ্যেই ফিরহাদ হাকিম একেবারেই অরাজনৈতিক এমন একটি কাজ করে ফেললেন, যাতে একদিকে নাগরিক সমাজ ও অন্যদিকে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি মধ্যে একটা নতুন বার্তা দেওয়া যায়। একই সঙ্গে তাঁর এই পদক্ষেপে দল হিসেবে তৃণমূল কিছুটা ফায়দা পেতে পারে।