কলকাতা ব্যুরো: মঙ্গলবার মেয়র পদে শপথগ্রহণের পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন করলেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। আগামীদিনে কীভাবে সাজবে কলকাতা? কী কী পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের? সেই সব প্রসঙ্গ তুলে ফিরহাদ বলেন, কলকাতা পুরসভায় তৃণমূলের যে বোর্ড তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর যে লক্ষ্য তা পূরণ করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য হবে। কলকাতার ঐতিহ্য রক্ষায় বিশেষ জোর দেবে নতুন পুরবোর্ড। ছ’মাস অন্তর পুরসভা রিপোর্ট কার্ড পেশ করবে। রিভিউ মিটিং করে তা পেশ করা হবে। একই সঙ্গে কলকাতার জলযন্ত্রণাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেন মহানাগরিক।
ফিরহাদ জানান, প্রতি শনিবার টক টু মেয়র তো চলবেই। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ‘শো ইওর মেয়র’। হোয়াটসঅ্যাপে মানুষ তাঁদের সমস্যা জানাবেন। স্ক্রিনের মাধ্যমে মেয়র তা দেখবেন। কারও বাড়ির সামনে নোংরা, জল জমা বা অন্য যা সমস্যা তা নিজের চোখে দেখবেন মেয়র। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপরই পরিবর্তিও ছবি যাবে পুরবাসীর কাছে। দেখানো হবে, কী ছিল আর কী হয়েছে।
পাশাপাশি কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম আরও জানান, এবার থেকে ডিজিটাল পরিষেবায় জোর দেওয়া হবে। অ্যাপের মাধ্যমে বিল্ডিং প্ল্যানে অনুমোদন, ড্রেনেজ কানেকশনের অনুমোদন, জল পরিষেবা সমস্ত বিষয়ে জানানো যাবে। মিউটেশন হবে অনলাইন মোডে। এছাড়া কর প্রদানও অনলাইনে করা যাবে। সঙ্গে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র, ট্রেড লাইসেন্সের বিমা অনলাইনে পুনর্নবীকরণ-সহ অনলাইনে আরও একাধিক জনহিতকর পরিষেবা দেবে কলকাতা পুরসভা।
এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, আমি অনুরোধ করব কলকাতার সমস্ত হকারকে। সবার পেটে ভাত নীতিতে বিশ্বাস করি আমরা। কিন্তু একটা নীতি তৈরি করছি যাতে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে বসতে পারেন তাঁরা। যেখানে সেখানে কালো, নীল প্লাস্টিক, আগুন জ্বালানো এগুলি বিষয়ে নজর দেওয়া হবে। ইলেকট্রিক আভেন ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হবে। সরকারের একটা অনুমোদন এসেছে। আমরা পলিসি তৈরি করব।
তবে বিধানসভা কিংবা পুরভোট, সবক্ষেত্রেই বিরোধীদের অন্যতম হাতিয়ার হয়েছে মহানগরবাসীর জনযন্ত্রণা। মেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার পর ফিরহাদ এ বিষয়ে বলেন, বিরোধী বন্ধুরা সবসময় বলেন লন্ডন হল না কলকাতা, ভেনিস হয়ে গেল। ভেনিস দেখতে হলে মাদ্রাজ যান, বম্বে যান, দিল্লি যান। প্যাটার্ন অব রেন বদলে গিয়েছে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হচ্ছে। যে ছ’টা পকেটে মূলত জল জমে বেহালা, খিদিরপুর, আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি সেসব জায়গার জন্য পাম্পিং স্টেশন বাড়ানো হবে। জল পরিষেবার সমস্যাও দেখা হবে বিশেষ নজর দিয়ে। টালিগঞ্জ, যাদবপুর, কিছুটা বড়বাজার এলাকার জন্য আমরা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সেটিং করছি।
এছাড়াও পুরনো বিপদজনক বাড়ি নিয়ে আইন আনবে পুরসভা। ফিরহাদ হাকিমের কথায়, বিপদজনক বাড়িগুলিতে যারা থাকেন তাদের সবরকম আইনি সুরক্ষা দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে সেই বিল্ডিং ভাঙা হবে। শরিকের লড়াই থাকলে আদালতের কাছে সাহায্য চাওয়া হবে।
ফিরহাদ হাকিম জানান, বহু শহরে বস্তি উন্নয়নের নামে বস্তি উচ্ছেদ করা হয়। কলকাতায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পে থাকার জায়গা দেওয়া হবে।