কলকাতা ব্যুরো: করোনার দাপট বাড়তেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল পাঁচ রাজ্য়ের বিধানসভা নির্বাচন। এরমধ্যে সব থেকে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশই। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের সবকটি রাজনৈতিক দলই নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তারা সমস্ত করোনা বিধি মেনে চলতেও রাজি হয়েছেন বলে জানানো হলো। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় তৈরি হয়েছিল, তা দূর হয়ে গেল।
জাতীয় নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, উত্তরপ্রদেশের শাসক দল বিজেপি, প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি সহ ছোট-বড় সমস্ত রাজনৈতিক দলই নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন যাতে হয়, তার দাবি জানিয়েছেন।
তবে যে হারে দেশে করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে নির্বাচনী প্রচার, ভোটগ্রহণ ও গণনার সময় করোনা সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলি নিজেরাই নির্বাচন কমিশনের কাছে সংক্রমণ থেকে বাঁচার নানা উপায় কার্যকর করার প্রস্তাব দিয়েছেন, একইসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে কোভিডবিধি ভঙ্গ করা নিয়েও নিজেরাই অভিযোগ জানিয়েছেন। করোনাবিধি অনুসরণ করে ভোটগ্রহণের জন্য রাজ্যে বিধিনিষেধ জারির প্রস্তাবও দিয়েছেন তারা।
উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব সহ যে পাঁচ রাজ্যে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, সেখানে যাতে টিকাকরণের হার বৃদ্ধি করা হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র বলেন, উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই ইতিমধ্য়েই করোনা টিকা পেয়েছেন। রাজ্যে এখনও অবধি কেবল চারজন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তিনি জানান, সমস্ত ভোটকর্মীদের অবশ্যই সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত হতে হবে। একইসঙ্গে তাদের প্রথম সারির যোদ্ধা হিসাবে গণ্য করা হবে এবং তারা যাতে দ্রুত বুস্টার বা প্রিকশন ডোজ় পান, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে। রাজ্যের সমস্ত ভোটাররাও যাতে কমপক্ষে করোনা টিকার একটি ডোজ পান, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য় নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া করোনা বিধি ও সামাজিক দূরত্ব যাতে অনুসরণ করা হয়, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের তরফে উত্তর প্রদেশে পোলিং বুথ বা ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে যে, রাজ্যে ১১ হাজার বুথ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে বুথের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ভোটদানের সময়ও বাড়ানো হয়েছে। উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে ভোটদানের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাড়ি থেকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমেও ভোটদানের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করা হবে।