কলকাতা ব্যুরো: মৃতের সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে চলেছে কাবুলে। বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে যে বিস্ফোরণ হয়, তাতে কমপক্ষে ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। মার্কিন সূত্রেও জানা গিয়েছে, লাগাতার বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৩ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে পরপর যে বিস্ফোরণ হয়, তাতে কমপক্ষে ৯০ জন আফগানবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আহত দেড়শোরও বেশি মানুষ। যদিও কাবুল স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে সকালে জানানো হয় দুর্ঘটনায় ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে তালিবানের তরফেও জানানো হয়েছে, তাদের ২৮ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আত্মঘাতী বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে নিয়েছে আইসিস।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের কাছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের সামনেই অবস্থিত ব্যারন হোটেলের সামনে দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হয়। যারা বিস্ফোরণ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন, তাদের উপর এলোপাথাড়ি গুলিও চালায় হামলাকারীরা।
প্রসঙ্গত, বিস্ফোরণের আঁচ আগেই পেয়েছিল গোয়েন্দা বাহিনী। আমেরিকা, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার তরফে বিমানবন্দরের আশেপাশে ভিড় করে থাকা সকলকেই জঙ্গি হানার আশঙ্কায় নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতেও অনুরোধ করা হয়। কিন্তু দেশ ছাড়ার আশায় যারা বিমানবন্দরের গেটেই ভিড় করে দাঁড়িয়েছিলেন, তারাই সন্ত্রাসবাদীদের চক্রান্তের শিকার হন। বিস্ফোরণের পর সন্দেহের তির প্রথমে তালিবানের দিকে গেলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয়, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে তারা কোনওভাবেই জড়িত নয়।
শুক্রবার তালিবানের তরফে জানানো হয়, বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণে তাদের কমপক্ষে ২৮ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। এদিকে, আমেরিকার তরফেও বৃহস্পতিবারের হামলার তুমুল সমালোচনা করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, যারা এই হামলা চালিয়েছে এবং যারা আমেরিকার ক্ষতি চায়, তারা শুনে রাখুন- আমরা ভুলব না, ক্ষমাও করব না। আমরা ঠিক খুঁজে বের করব এবং তোমাদের এই হামলার মূল্য চোকাতেই হবে। পাশাপাশি পেন্টাগনকে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, বিমানবন্দরের হামলার পরই ফের আবার হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আরও বড় বিপদ এড়াতে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যেই উদ্ধারকার্য শেষ করার চেষ্টা চলছে জোরকদমে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালেও কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাবুল বিমানবন্দরগামী সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তালিবানরাও বিমানবন্দরের আশেপাশে তাদের নিরাপত্তা কঠোর করেছে বলে জানিয়েছে।