কলকাতা ব্যুরো: পুজোর সময়ে রাতে থাকছে না নাইট কার্ফু। তবে আগের মতোই জারি থাকছে কোভিড বিধি। বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে করোনার বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। তবে আগের বছরের মতো এই বছর অবশ্য দুর্গাপুজোর সময়ে রাতে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না। অথচ হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে এ বছরেও করোনা নিয়ন্ত্রণে গতবারের মতো মণ্ডপে মানুষের ভিড় ঠেকাতে নো এন্ট্রি নির্দেশ ফের জারির আবেদন করা হয়েছে। শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে তার শুনানি। এই অবস্থায় রাজ্যের পুজোর মধ্যে নাইট কারফিউ বাতিলের ঘোষণায় মামলার শুনানিতে বিতর্ক তৈরীর অবকাশ রয়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
রাজ্য সরকারের তরফে বৃহস্পতিবার নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, উৎসবের মরশুমের কথা মাথায় রেখে আগামী ১০ থেকে ২০ অক্টোবর রাতে ঘোরাঘুরি ও যান চলাচলের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো। পুজোর নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, আগামী ১২ থেকে ১৫ অক্টোবর এই চারদিন দুর্গাপুজো। এরপর ২০ অক্টোবর লক্ষ্মীপুজো রয়েছে। ফলে সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ঘোষিত ১০ দিনের মধ্যে পুজোর দিনগুলি পড়ে যাওয়ায় সেদিন রাতে ঘোরাঘুরি বা যান চলাচলের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না।
তবে অক্টোবর মাসের বাকি দিনগুলিতে অবশ্য রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত রাতে চলাচলের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, সকলকে মাস্ক ও সামাজিক দুরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনও শিথিলতা বরদাস্ত করা হবে না। হাইকোর্টে মামলায় রাজ্যের তরফে নবনিযুক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল দুর্গাপূজায় বিধি-নিষেধ নিয়ে সরকারের অবস্থান জানাতে কয়েকদিন সময় চেয়েছিলেন। তার আবেদন মেনে হাইকোর্ট শুক্রবার মামলাটির শুনানি করবে। এই অবস্থায় রাজ্যের দুর্গাপূজার মধ্যে নাইট কার্ফু শিথিল এর সিদ্ধান্ত, আসলে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাজ্য কতটা তৎপর তার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন মামলাকারীর আইনজীবীরা।
মামলাকারীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি আজ শুনানিতে হাইকোর্টকে তারা দেখাবেন। মামলাকারীর বক্তব্য, তৃতীয় ঢেউ আশার আশঙ্কায় সতর্ক হওয়ার চেষ্টা করছেন সবাই, তখন রাজ্যের এই বিজ্ঞপ্তি মানুষকে আরও দুর্গাপুজোয় ভিড় করতে উৎসাহ দিতে পারে। তাই এ ব্যাপারে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের নতুন এই নির্দেশিকায় লোকাল ট্রেন স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে কোনও কথা অবশ্য বলা নেই। সেক্ষেত্রে শিয়ালদহ ও হাওড়া ডিভিশনে যে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলছে, সেই ট্রেনই বহাল থাকবে। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে স্কুল, কলেজ খোলার বিষয়েও কিছু বলা হয়নি। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, গত বছর পুজোর সময়ে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল পুজোর ক্লাবগুলির ক্ষেত্রে, এবারেও তা বহাল থাকবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। সেই কথা মাথায় রেখেই পুজোর এই কটা দিন রাতে চলাচলের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত।