কলকাতা ব্যুরো: মণ্ডপে নো এন্ট্রি নির্দেশে কিছুটা ছাড় পেতে মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে জরুরী ভিত্তিতে ওই রায়ের উপর রিভিউ আবেদন হলো বটে, কিন্তু হাইকোর্ট মামলার অনুমতি দিলেও আজ শুনানি হবে না বলে জানিয়ে দিল আদালত। আদালত বলেছে, মামলার পর সব পক্ষকে নোটিশ দিয়ে বুধবার শুনানির জন্য আসুক ফোরাম দুর্গাপুজো কমিটি।
বড় পুজো থেকে ১০ মিটার দূরে ও ছোট পুজো মণ্ডপ থেকে পাঁচ মিটার দূরে ব্যারিকেড করে দর্শকদের প্যান্ডেলে ঢোকা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। রিভিউ আবেদনে কলকাতার পুজো গুলির যৌথ সংগঠন, ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটির দাবি, প্যান্ডেলে ঢোকার অনুমতি দিতে হবে দর্শকদের। তাদের যুক্তি, কলকাতার বহু রাস্তা এবং গলির মধ্যে দুর্গা পুজোর আয়োজন করা হয়। সেখানে একদিক দিয়ে ঢুকে, মন্ডপ দেখে অন্য পাশ দিয়ে বের করা হয় দর্শনার্থীদের। কিন্তু হাইকোর্ট ১০ মিটার বা পাঁচ মিটার দূরে যে ব্যারিকেড দিতে বলেছে, সে ক্ষেত্রে দর্শকরা এসে সেখানে আটকে পড়বেন। ফলে ভিড় হবে সেই জায়গাতেই। তাতে সংক্রমণ আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।
একইসঙ্গে ফোরামের যুক্তি মণ্ডপে দর্শক না ঢুকতে পারলে তাদের স্পন্সরদের থেকে টাকা পাওয়ার সুযোগ হারাতে হবে। পাশাপাশি তাদের আরো যুক্তি, দেশ আনলক হওয়ার পর এখন দু’শ জনকে এক জায়গায় জমায়েত হওয়ার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে সেখানে হাইকোর্টের এই নির্দেশ বাস্তবের সঙ্গে মিলছে না বলে তাদের অভিযোগ। ফোরামের এইভাবে হাইকোর্টের নির্দেশ চ্যালেঞ্জে পাল্টা জনমত তৈরি হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন চিকিৎসক ও নাগরিকদের মধ্যে।
করোনার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আবার একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে দুর্গাপূজা গুলির উদ্যোক্তাদের সামনে এগিয়ে দিয়ে। কারণ হাইকোর্ট খুব সচেতনভাবেই মণ্ডপে দর্শক ঢোকা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে পাঁচ মিটার বা ১০ মিটার দূরে এসে দর্শকরা জমায়েত হবেন সেই যুক্তিও মানা যাচ্ছে না। কারণ সেখানে পুলিশকে বলা হয়েছে, কোন রকম জমায়েত করতে দেওয়া যাবে না। হাইকোর্ট তার রায়ও সে কথাই উল্লেখ করেছে।
এমনকি হাইকোর্ট এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, শুধু সরকার বা প্রশাসনকে নির্দেশ দিলেই মানুষের ভিড় কমবে না, এক্ষেত্রে মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধিরও পরামর্শ দিয়েছে আদালত। মানুষের এবার দুর্গা পূজার জন্য বাইরে বেরোনোর ক্ষেত্রেই যেখানে আদালত আপত্তি জানানোর চেষ্টা করছে, সেখানে ফোরামের যুক্তি কোনভাবেই ধোপে টেকে না।