কলকাতা ব্যুরো: করোনা ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ-ই নেওয়া থাকতে হবে, তবেই সিঁদুর খেলায় অংশগ্রহণ করা যাবে। অঞ্জলি দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম মেনে চলতে হবে। দুর্গাপুজোর গাউডলাইন সংক্রান্ত মামলা গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে আদালত এই নির্দেশ দিল। শুধু তাই নয়, উপাচারের সময়ে কারা মণ্ডপে থাকবেন, সেই নামের তালিকাও আগে থেকে উদ্যোক্তাদের তৈরি করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত বৃহস্পতিবার আরও একবার পুজো উদ্যোক্তাদের স্পষ্ট করে দেন, ‘কঠোরভাবে মানতে হবে করোনা বিধি।’ দুটি ডোজ নেওয়া থাকলেও মাস্ক বাধ্যতামূলক বলে আদালত জানিয়ে দিয়েছে।
পাশাপাশি পুজো মণ্ডলগুলিতে এক সঙ্গে কত জন করে থাকতে পারবেন, সেই সংখ্যাটাও এদিন আদালত নির্দিষ্ট করে দেয়। হাইকোর্টের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, বড় মণ্ডলগুলিতে একসঙ্গে থাকতে পারবেন ৪৫-৬০ জন দর্শনার্থী। ছোটো মণ্ডপগুলিতে একসঙ্গে থাকবে পারবেন ১৫ জন। নিয়ম না মানলে পুজোর অনুমতিই বাতিল করে দেওয়া হবে বলে কঠোরভাবে জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজোয় হাইকোর্টের নির্দেশ মানছে না রাজ্য। এই অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা গ্রহণ করে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মামলার শুনানি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় ডিভিশন বেঞ্চে দৃষ্টি আকর্ষণ করে মামলাকারী অজয় কুমারের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের মুখ্যসচিব দুর্গাপুজো সংক্রান্ত যে ১১ দফা নির্দেশিকা জারি করেছেন, তাতে অঞ্জলি থেকে শুরু করে সিঁদুর খেলা, মণ্ডপে প্রবেশ সমস্ত কিছুই রাখা হয়েছে। এটা পরিষ্কার আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হচ্ছে।
এছাড়া পুজো মণ্ডপে ‘নো এন্ট্রি’র বিষয়ে আরও একবার সতর্ক করল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন, পুজোর গাইডলাইন মামলায় এজিকে তলব করে আদালত। এজি-র সামনেই আদালত আরও একবার পুজোতে স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে কড়া বার্তা দেয়। পুজো মণ্ডপগুলি যাতে দর্শনার্থী শূন্য হয়, সে ব্যাপারে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যকে।
তবে প্রথমে রাজ্যের সার্কুলার কয়েকটি ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশ অবমাননা করছে বলে মামলাকারী অভিযোগ করেন। সেক্ষেত্রে এজি আদালতে স্পষ্ট জানান, হাইকোর্টের নির্দেশের আগেই সার্কুলার দেওয়া হয়েছে। তবে হাইকোর্টের নির্দেশের পর আবার অতিরিক্ত সার্কুলার জারি করে কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে। এজি আদালতে জানান, বর্তমানে বাংলায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২ শতাংশের নীচে।
এজি আদালতে বলেন, “আমরা নতুন কিছু বলে কাউকে বিরক্ত করছি না। তবে নো এন্ট্রি থাকবে। ডাবল ভ্যাক্সিন থাকতে হবে পূজো উদ্যোগক্তাদের।” তবে সিঁদুর খেলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মামলাকারী আইনজীবী।
আদালতে তিনি সওয়াল করেন, “সিঁদুর খেলায় স্পর্শ থাকে। গঙ্গাসাগরে ই-স্নানের মতো ই- সিঁদুর খেলা হোক।” যদিও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায় ও অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট বলে দেন, “স্বাস্থ্য দফতর এই বিষয়গুলো দেখবে। নির্দেশ যে প্যান্ডালে মানা হবে না, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”