এক নজরে

শোচনীয় অবস্থা কলকাতা এবং জেলার মৃৎশিল্পীদের

By admin

October 09, 2020

কলকাতা ব্যুরো : পূজো দোরগোড়ায়। বাকি আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন। কিন্তু ভয়ঙ্কর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন কলকাতা এবং জেলার মৃৎশিল্পীরা । অন্যান্যবার এই সময় নিঃশ্বাস ফেলার সময় থাকে না। চলে রাতভর কাজ। শেষ তুলির টান, চক্ষুদান, প্রতিমার চুল লাগানো, সাজ তৈরির কাজ চলে দিনভর। একটুও সময় পান না পটুয়া পাড়ার লোকজন। কিন্তু এবছরের বিষয়টা সম্পূর্ণ অন্যরকম। দেশজুড়ে আর্থিক মন্দা তো চলছিলো, তার উপর আবার করোনা। মার্চের শেষ থেকে দেশজুড়ে লকডাউনে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো প্রতিমা তৈরির কাজ। যা অর্ডার আসছিলো তাও অনেকে বন্ধ করে দেন। বড়সড় অর্থনৈতিক ধাক্কায় কার্যত পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে পটুয়াপাড়া। পুজোর ভবিষ্যতই অনিশ্চিত ছিলো। সরকার থেকে নির্দেশিকা প্রকাশিত হলেও, আর্থিক ধাক্কা সামলে পুজো করার পরিস্থিতিতে নেই অনেক পুজো কমিটিই।

কলকাতার বড় বড় পুজো গুলোতেও বাজেটে কাটছাঁট হয়েছে। আর বহু ছোট পুজো এবছর বন্ধ। যারা পুজোর আয়োজন করেছে, তারাও বাজেট কমিয়ে ফেলেছে ভয়ঙ্করভাবে। বড় প্রতিমার বরাত এবছর নেই বললেই চলে। প্রায় সব পুজো কমিটি কম উচ্চতার প্রতিমা করছে। কলকাতা কুমারটুলি প্রতিমা শিল্পী মালা জানালেন, প্রতিবছর যেখানে ৪২ টা ঠাকুর তৈরি হয় এবছর তা নেমে গিয়েছে ১৭- ১৮ তে। কুমারটুলির অনেক শিল্পী জানেন না সারা বছরের রুজি-রোজগার তাদের চলবে কেমন করে। এবছর অন্নপূর্ণা ঠাকুর তৈরি হওয়ার পরও তা বিক্রি হয়নি। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে লক্ষ্মী গণেশ বিক্রি করে আয় হতো। এবছর সেটাও বন্ধ ছিল। “একের পর এক ক্ষতি হচ্ছে”, আফসোস প্রতিমা শিল্পীদের গলায়।

একই রকম পরিস্থিতি কৃষ্ণনগরের পটুয়াপাড়ায়। সার্বিক পরিস্থিতির কথা কিছু কিছু জানালেন প্রতিমা শিল্পী সুবীর পাল। কথায় কথায় জানালেন, লকডাউনে তো সব কাজই বন্ধ ছিল। যেগুলো আগে অর্ডার এসেছে সেগুলোর কথা আলাদা। তারপর তো আর বরাত আসেনি। দিন ১৫ – ১৬ আগে কয়েকটি ঠাকুরের বরাত এলো। তাও ছোট প্রতিমা। বুঝুন অবস্থা। সেইসঙ্গে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মাটির পুতুল বিক্রেতাদের। পর্যটন একেবারেই বন্ধ কৃষ্ণনগরে। পুতুল কেনার লোক নেই। পেটের ভাত জোগাড় করতে এখন অনেক শিল্পী সবজি বিক্রি করছেন অথবা টোটো চালাচ্ছেন।