এক নজরে

ড্রোন ওড়ানোর নিয়ম শিথিল, নির্দেশিকা জারি সরকারের

By admin

August 27, 2021

কলকাতা ব্যুরো: বর্তমানে ড্রোন শব্দটির সঙ্গে আমরা বহুল পরিচিত। তবে ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রে এবার পাল্টে যাচ্ছে নিয়ম। বৃহস্পতিবারই এই সংক্রান্ত নিয়া নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। নয়া নিয়মে কোনও সংস্থার জন্য ড্রোন ওড়ানো এ বার আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে। এ বার লাইসেন্স পাওয়ার আগে রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে আর সুরক্ষার জন্য কোনও ছাড়পত্র লাগবে না।

সাম্প্রতিককালে করোনা পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, খাদ্য, ওষুধপত্র, ইত্যাদি প্রত্যন্ত জায়গায় পৌঁছানোর জন্য অধিকাংশ সংস্থাই এখন ড্রোন ব্যবহারের ওপর জোরকদমে কাজ চালানো হচ্ছে। তাই সারা ভারতে ড্রোন প্রস্তুতকারক, অপারেটর এবং স্টার্টআপ সংস্থাগুলির জন্য এর ব্যবহারকে আরও সহজ এবং সাবলীল করে তুলতে সরকার এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

সম্প্রতি সরকার Unmanned Aircraft Systems (UAS) Rules, 2021 বাতিল করেছে এবং “liberalised Drone Rules, 2021” চালু করেছে। সরকার মনে করে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের মধ্যে ড্রোন হাব হিসেবে উঠে আসতে পারে। তবে স্টার্টআপগুলি ইতিমধ্যে খাদ্য এবং ওষুধ সরবরাহের জন্য ড্রোন ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, তবে এটি কৃষি, খনি, পরিকাঠামো, নজরদারি এবং আইন প্রয়োগের জন্যও কার্যকর বলে প্রমাণিত হতে পারে।

কি কি রয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশিকায়? জেনে নিন!

১. ড্রোনে এবার আরও বেশি ওজনের জিনিস বহন করা যাবে। পেলোডের পরিমাণ ৩০০ কেজি থেকে বাড়িয়ে ৫০০ কেজি করা হচ্ছে। এ ফলে ড্রোনকে কাজে লাগিয়ে পণ্য পরিবহন করা যাবে, ড্রোন ট্যাক্সিও চালানো যাবে।

২. লাইসেন্স পাওয়ার আগে নিরাপত্তার জন্য কোনও ছাড়পত্রের দরকার নেই। অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে এতদিন যে টাকা লাগত সেটাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। একেবারে ন্যুনতম টাকা দিয়ে অনুমোদন পাওয়া যাবে।

৩. ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রে এতদিন পর্যন্ত একগুচ্ছ নথির প্রয়োজন হতো। এবার আর সেগুলি লাগবে না। আগে একটি অথরাইজেশন নম্বর, আইডেন্টিফিকেশন নম্বররে প্রয়োজন পড়ত। এ বার সেগুলি ছাড়াই ড্রোন ওড়ানোর অনুমোদন মিলবে। এ ছাড়া যিনি ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ করবেন, তাঁর অনুমোদন ও আরও বেশ কিছু নথি লাগত। এ বার সেসব ঝামেলা থেকে মুক্তি।

৪. ড্রোন নিয়ে নতুন যে পলিসি আনা হল তা ভঙ্গ করলে সর্বাধিক যে জরিমানা দিতে হবে, তার পরিমাণও কমানো হল অনেকটাই। ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে সর্বাধিক জরিমানা হিসেবে। অন্য কোনও আইন ভঙ্গ করলে সেই জরিমানাও দিতে হবে না।

৫. বিদেশ থেকে আমদানি করা ড্রোনের বিষয়টি দেখাশোনা করবেন ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড। নতুন আইনে কার্গো ডেলিভারি বা ড্রোনের মাধ্যমে পন্য পরিবনের জন্য নতুন করিডর তৈরি হবে।

৬. ড্রোনের জন্য আলাদা এয়ারস্পেসের মানচিত্র তৈরি করা হবে। গ্রিন জোন, ইয়েলো জোন ও রেড জোন থাকবে সেখানে। এত দিন এয়ারপোর্টের ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে ড্রোন ওড়ানো যেত না। সেই দূরত্ব কমিয়ে ১২ কিলোমিটার করা হয়েছে। বিমাবন্দরে ৮ থেকে ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ২০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত কোনও ড্রোন ওড়ানো যাবে না।

৭. ডিজিটাল স্কাই প্লাটফর্মে ড্রোনের রেজিস্ট্রেশন করা যাবে অনলাইনে। অনুমোদনপ্রাপ্ত ড্রোন স্কুলে পরীক্ষা করা হবে ড্রোনগুলির। ড্রোনের ট্রেনিং নিয়ে অনলাইনে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে।

প্রসঙ্গত,ভারতে ড্রোনের পাঁচটি ক্যাটাগরি রয়েছে। ন্যানো: ২৫০ গ্রামের চেয়ে কম বা সমান। মাইক্রো: ২৫০ গ্রামের বেশি এবং ২ কেজির চেয়ে কম বা সমান। ছোটো বা স্মল: ২ কেজির বেশি এবং ২৫ কেজির চেয়ে কম বা সমান। মাঝারি বা মিডিয়াম: ২৫ কেজির বেশি এবং ১৫০ কেজির চেয়ে কম বা সমান। বড়ো বা লার্জ: ১৫০ কেজির বেশি।

সম্প্রতি ড্রোন সংক্রান্ত এই নয়া নির্দেশাবলী নিয়ে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের ড্রোন সেক্টরের জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে এই নয়া আইন তৈরি হয়েছে। অনুমোদন, নথির প্রয়োজনীয়তা সহ একাধিক বিষয়ে অনেক বাধা কমিয়ে দেওয়া হল। এর ফলে আবিস্কার ও বাণিজ্যে অনেক নতুন সম্ভাবনা খুলে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।