কলকাতা ব্যুরো: সংক্রমণ কমলেও রাজ্যে এখনও করোনা যথেষ্ট স্পর্শকাতর। কিন্তু কোন একটি পাড়ায় নির্দিষ্ট একটি বা দু’টি বাড়িতে করোনা ধরা পড়লেই তার সামনে বাঁশ বা কোনরকম ব্যারিকেড করে দেওয়ার রীতি বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ন স্বরূপ নিগম এক নির্দেশিকায় জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে নির্দিষ্ট কোন একটি বা দু’টি বাড়িতে করোনা ধরা পড়লেই তাদের সামনে কোন রকম ভাবে ব্যারিকেড করা বা পোস্টার দেওয়া যাবে না।রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত অনেকটাই মানবিক বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।গত কয়েক মাস ধরে করোনা আবহে একদিকে মানুষের মানবিকতা যেমন দেখা গিয়েছে, তেমনই মানুষের অমানবিকতার ছবিও কম ধরা পড়েনি। কোন একটি এলাকার একটি বা দু’টি বাড়িতে করোনা ধরা পড়েছে, এই খবর পাওয়ার পরেই সেই পরিবার বা পরিবারগুলিকে একরকম অচ্ছুৎ করে রেখেছে প্রতিবেশীদের একটা অংশ। কোথাও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, আবার কোথাও একটি পরিবার অমানবিকতার শিকার হয়েছে।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় কোথাও কোথাও চলে গিয়েছে যে করোনা ধরা পড়া যেন মানুষের কাছে একটা বিশাল পাপের মত মনে হয়েছে ভুক্তভোগী দের কাছেই। যতটা না রোগে কষ্ট পাচ্ছেন, ভুগছেন, তার থেকেও বহু পরিবারের কাছে সামাজিক ব য়টের শিকার হওয়া অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে পড়েছে।এই অবস্থায় এদিন স্বাস্থ্য দপ্তরের এই বিধানকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন নাগরিকদের একটা বড় অংশ। স্বাস্থ্য সচিবের বক্তব্য, শুধু কোলকাতা নয়, বহু জেলায় এমন প্রবণতা দেখা গিয়েছে।আবার কোন বাড়িতে করোনা ধরা পড়লে অনেক সময় আশপাশের লোক খোঁজ রাখেন না। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা দিয়ে দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র বাড়ির সামনে প্রশাসন বাঁশের বেড়া করে দেওয়া বা এই বাড়িতে করোনা রয়েছে, এমন লিখে দেওয়ার ফলে এলাকার মানুষের কাছে তা একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।বহু ক্ষেত্রেই এলাকার সেইসব বাড়িকে এড়িয়ে চলার শুধু নয়, সেই পাড়াই বয়কট করা শুরু করেছেন, অন্য পাড়ার লোকজন। মানুষের মধ্যে এমন মনোভাব দূর করতেই স্বাস্থ্য দপ্তর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলাশাসকদের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য দপ্তর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনোভাবেই নির্দিষ্ট একটি বা দু’টি বাড়ির সামনে করোনা ধরা পড়লেই কোনরকম মারকিং যেন না করা হয়। তাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আর ভুগতে হচ্ছে সেইসব পরিবারকেই।