এক নজরে

জুতো পরে না, হাসপাতালেও যায় না

By admin

June 21, 2023

ভাবতে অবাক লাগলেও এটাই ঘটনা যে এদেশের একটি গ্রামের সব বাসিন্দা এই যুগে এখনো খালি পায়ে থাকে, তারা কোনো ধরনের জুতা পরে না। এমনকি তাদের বাইরে কোথাও যাওয়ার দরকার হলেও তারা খালি পায়েই যাতায়াত করে। কেবল তাই নয়, পরিবারের কেউ যদি অসুস্থ হয়, তাহলেও তারা হাসপাতালে যায় না। আর কোনো কারণে যদি তাদের আত্মীয় বাড়িতে যাওয়ার দরকার হয় বা অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার হয় তাহলে তারা বাইরের কোনো খাবার এমনকি জলও পান করে না। এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও, এ রকমই একটা গ্রাম রয়েছে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপাতি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে। এই গ্রামের নাম ভেমানা ইন্দলু। এই গ্রামের বাসিন্দারা জানায় যে, এটা তাদের অনেক পুরনো ঐতিহ্য।

এই গ্রামে কেউ জুতা পরে না। আরও যেসব অদ্ভুত রীতি মেনে চলে তা এই যুগে ভাবতে অবাক লাগে।বাইরে কোথাও যাওয়ার দরকার হলেও তারা খালি পায়েই যাতায়াত করে। কেবল তাই নয়, পরিবারের কেউ যদি অসুস্থ হয়, তাহলেও তারা হাসপাতালে যায় না। আর কোন কারণে যদি তাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার দরকার হয় বা অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার হয় তাহলে তারা বাইরের কোন খাবার এমনকি জলও পান করে না। গ্রামের বাসিন্দারা বলেন যে, এটা তাদের অনেক পুরনো ঐতিহ্য। এমনকি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যখন গ্রামে আসেন তার তিনি নিজেও জুতো ছাড়াই আসেন। এই গ্রামের শিক্ষিত মানুষেরাও এই রীতি মেনে চলে।

এই গ্রামের মানুষ বিশ্বাস করে যে তারা “পালভেকারি” গোত্রের। পালভেকারি মূলত তামিল নাড়ুর কৃষক সম্প্রদায়।গ্রামের মানুষ মন্দিরে গিয়ে পূজা-অর্চনা এবং অন্যান্য রীতি-নীতি পালন করে থাকেন। গ্রামে তারা নরসিংহ স্বামী ও গঙ্গা মায়ের পুজো করেন। তারা বিশ্বাস করেন যে, দেবতাই সব কিছুর খেয়াল রাখবেন। যার কারণে এই গ্রামের মানুষ কখনো হাসপাতালে যায় না।তাদের বিশ্বাস, যদি সাপে কামড়ায় তাহলেও তাদের দেবতা সেটির আরোগ্য করবেন। তাঁরা হাসপাতালে না গিয়ে সাপের পাহাড় প্রদক্ষিণ করেন, নিম গাছ প্রদক্ষিণ করেন।

এই গ্রামের যে শিশুরা স্কুলে যায় তারাও জুতা পরে না এবং স্কুল থেকে যে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়, সেটাও তারা খায় না। তারা যদি বাইরের কাউকে স্পর্শ করে তাহলে স্নান না করে বাড়িতে ঢোকে না।গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এই গ্রামের নারীদের মধ্যে কেউ গর্ভবতী হলেও তারা হাসপাতালে যায় না। সবকিছু বাড়িতেই হয়। দলিত সম্প্রদায়ের মানুষদের এই গ্রামে প্রবেশ করা নিষেধ। এমনকি এই গ্রামের মানুষ দলিত সম্প্রদায়ের কারো সঙ্গে কথাও বলে না।নারীদের ঋতুস্রাবের সময়ে গ্রামের বাইরে থাকতে হয়। অন্তত পাঁচ দিন গ্রামের বাইরে থাকতে হয়। গ্রামের মানুষ মিডিয়া থেকেও নিজেদেরকে দূরে রাখে।এই গ্রামে যে আসবে সে যদি সরকারি কর্মকর্তা এমনকি পার্লামেন্ট সদস্যও হয়ে থাকেন, তাহলেও তাকে গ্রামের বাইরে জুতা খুলে ঢুকতে হয়। এই গ্রামের আত্মীয়-স্বজন যারা এই গ্রামে দেখা করতে আসেন তাদেরকেও এই রীতি মেনে চলতে হয়।