কলকাতা ব্যুরো: এসএসসি মামলা কার্যত নজিরবিহীন। এক দিনে তিন বিচারপতির হাত বদল হলো একটি মামলা। সোমবার প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিলেন মামলাটি বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ শুনবে। যদিও বিচারপতি সৌমেন সেন জানিয়েছেন আপাতত লিস্টের মামলা শুনবেন তিনি। সময় পেলে এসএসসি শুনবেন। ফলে আপাতত বহাল চারজনের অস্বস্তি।

সোমবার এসএসসি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা থেকে সরলো কলকাতা হাইকোর্টের হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। দিনের শুরুতে এসএসসি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতেই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে মোট ১০টি মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান। এসএসসি মামলায় এটি বড়সড় মোড় বলে মনে করা হচ্ছে।

এই মুহূর্তে এসএসসি, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি-তে নিয়ে মোট ১০ টি মামলা চলছে হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে। তবে এদিন ব্যক্তিগত কারণে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন দুই বিচারপতি। ফলে ডিভিশন বেঞ্চের অস্তিত্বই রইল না। সোমবার তাই এই মামলার শুনানি হচ্ছে না। মঙ্গলবার হাইকোর্টের অন্য কোনও ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে খবর।

স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকারের তৈরি উপদেষ্টা কমিটির প্রধান এসপি সিনহা এবং চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। এসপি সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কিন্তু বাকি সদস্যরা সিবিআইকে এড়াতে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। তা বিচারাধীন ছিল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে। তবে সোমবার আচমকাই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি ট্যান্ডন ও বিচারপতি সামন্ত। 

এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির প্রধান এসপি সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী সোমবার পর্যন্ত এসপি সিনহাকে তলব করতে পারবে না সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও রকম এফআইআরও করা যাবে না। কিন্তু এই বেনিয়মের ঘটনায় অভিযুক্ত বাকি চারজনের জন্য লাগু থাকছে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় অর্থাৎ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই। প্রয়োজনে এফআইআরও করা যাবে। 

সোমবার এই মামলা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে উঠলেও বিচারপতিরা অব্যহতি নেওয়ায় তা হয়নি। তবে এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির বাকি চারজনকে নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। আগামী  ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিবিআইয়ের সঙ্গে তদন্তের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। মামলায় আরও নির্দেশ, শিক্ষাদপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং সিবিআই ডিরেক্টর ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশের কপি পাঠাতে হবে। এছাড়া মঙ্গলবার থেকে এসপি সিনহাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version