কলকাতা ব্যুরো: বিসর্জনের পর জলাশয় দূষণ বিতর্কে জল ঢালতে এবার মরিয়া রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। শহর-গ্রামের যেসব পুকুর-জলাশয় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়, সেখানে আধুনিক ব্যবস্থার অঙ্গ হিসেবে সিন্থেটিক লাইনার ব্যবহার করার জন্য আগেই পরামর্শ দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও এবার পরীক্ষামূলকভাবে ওই পদ্ধতি শুরুর পরিকল্পনা করেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, এবার দমদম পার্ক এবং লেকটাউনের দুটি পুকুরের ঘাটে সিন্থেটিক লাইনার লাগানো হবে। ঠাকুর বিসর্জন দেওয়ার পর যে সব বর্জ্য জলে মিশে যায়, এই ব্যবস্থা থাকলে তা আর জলে পড়তে পারবে না। তাই ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার নির্দেশিকা মেনে এবার পরীক্ষামূলকভাবে এই কাজটা শুরু করতে চায় রাজ্য। যদি তা বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আগামী দিনে রাজ্যের সব পুকুর ও জলাশয় প্রতিমা বিসর্জন এর আগে এই প্রকল্প কার্যকর করা হবে।বিসর্জনের পর প্রতিবছরই জল দূষিত হওয়া নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মহল থেকে। তাই এবার বিসর্জন এর আগে, বিসর্জনের সময় এবং প্রতিমা নিরঞ্জনের পর- তিনটি পর্যায় জলের গুণমান পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বিসর্জনের দূষণ নিয়ে জাতীয় সবুজ আদালতের তরফে সতর্ক করা হচ্ছিল রাজ্য সরকারকে। একইসঙ্গে ঢাকুরিয়া লেকে ছট পুজো করার অনুমতি দেওয়া তেও যথেষ্ট সমালোচনার মধ্যে এখনও রয়েছে সরকার। বিসর্জন দিয়ে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো নিশানা করছে প্রতীমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে দূষণ ইস্যুতে। গত কয়েক বছরে বিসর্জনের পর কাঠামো তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে, বিসর্জনের সময় অন্যান্য উপকরণ জলে না ভাসানোর ব্যাপারে অনেকটাই সচেতনতা গড়ে তোলা গিয়েছে।
পাশাপাশি বিসর্জনের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই জল পরিষ্কার করে দে ওয়া হচ্ছে। কিন্তু আরো ভালোভাবে এই কাজ করার জন্য এবার কোমর বেঁধে নেমেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এবারও পুজোর কতদিন বিকেল পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এর কন্ট্রোল রুমে দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন নাগরিকরা। যার নম্বর 18003453390।
এবার যেহেতু কোনো মণ্ডপেই দর্শক ঢুকতে পারবে না বলে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এবার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পরিবেশ বান্ধব পুরস্কার দেবে না বলে জানিয়েছে পর্ষদ। গত বেশ কয়েক বছর ধরে পর্ষদ এই পুরস্কার দিচ্ছিল।