এক নজরে

দুশ্চিন্তা দেখালেও রাজ্যের ভরসায় সাগর মেলায় সবুজ সংকেত হাইকোর্টের

By admin

January 08, 2021

কলকাতা ব্যুরো: তিন দিন ধরে সাগর মেলা হলে করোনা বাড়বে আশঙ্কায় হাইকোর্ট দুশ্চিন্তা করেছিল। কিন্তু শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তার হলফনামায় মোটামুটি চিন্তামুক্ত আদালত। অন্তত যেভাবে সাগর মেলায় নতুন করে কোনো বিধিনিষেধ না চাপিয়ে শুধুমাত্র রাজ্যের সরকারকে নাগরিকদের সচেতন করতে বলেই আদালত ছাড়পত্র দিয়েছে, তাতে অনেকেই মনে করছেন, আগামী দিনে মেলা থেকে বড় সমস্যা রাজ্যে ডেকে আনলে তাতে বিচার বিভাগ সমালোচনার উর্ধ্বে থাকবে না।

প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সাগর মেলা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন রায় দিতে গিয়ে টেনে এনেছেন সাম্প্রতিক দুর্গাপুজো, কালীপুজো প্রসঙ্গ। ওই সমস্ত পুজোয় রাজ্য সরকার যে ভূমিকা নিয়েছিল, তার ভূয়শী প্রশংসা করেছে আদালত। যদিও আইনজীবীরা মনে করাচ্ছেন, যেভাবে দুর্গাপূজা মণ্ডপ নো এন্ট্রি জোন করে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ প্রথমেই কড়া বার্তা সরকার এবং নাগরিক সমাজকে দিয়েছিলেন, তাতে প্রথম ধাক্কাতেই সকলে সতর্ক হয়ে গিয়েছিল আদালতের ভয়। বাকিটা সময়ের সঙ্গে চলেছে। ফলে আদালতের যা করনীয় সেটা প্রথমে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় করে দিয়েছিলেন বলে মনে করছেন বহু আইনজীবী। যদিও এদিন মামলাটি শেষ করেনি আদালত। আবার ১৩ জানুয়ারি শুনানি রাখা হয়েছে। বক্তব্য, যদি ওই দিন রাজ্যের মুখ্য সচিব যে রিপোর্ট দেবেন, তাতে সন্তুষ্ট না হয় আদালত সেক্ষেত্রে মেলা বন্ধ করা হবে।অথচ বাস্তবে যারা এই মেলার ব্যাপারে অভিজ্ঞ তারা বলছেন, মোটামুটি সাত দিনের মেলা ১৫ তারিখ সকালেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সেখানে সাগরে স্নান করে পুজো দেওয়ার জন্য আগের চার থেকে পাঁচ দিন কাতারে কাতারে মানুষ যান সেখানে সাগর স্নান করতে। শুধুমাত্র শেষ দিন মাহেন্দ্রক্ষণে স্নান করার জন্য কিছু মানুষ অপেক্ষা করেন। তাই ১৩ জানুয়ারি আদালত মামলা রাখলেও বা যদি মেলা কোন কারনে বন্ধের ভাবনাও করে আদালত, বাস্তবে তাতে কোনো হেরফের হবে না। কারণ মেলা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সেখানে মানুষ এখনও স্নান করছেন। যারা মামলাকারী তারাও এই মেলা সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান না থাকায় আদালতকে এ ব্যাপারে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে।এদিন আদালত যা বললো…” 1) আগামী বুধবার মুখসচিবের রিপোর্ট তলব। রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই মেলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।2) স্বাস্থ্য-অধিকর্তার রিপোর্টে প্রাথমিক রিপোর্টে সন্তুষ্ট আদালত।3) প্রশাসনিক পদক্ষেপ, পুলিশি ব্যবস্থা এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য-ব্যবস্থায় আদালত সন্তুষ্ট।4) জোর দিতে হবে ই-স্নানের ওপর।যারা ই-স্নান করবেন তাদের প্রয়োজনে পুরস্কৃত করা হোক।5) বারবার মাইকে প্রচার করা হোক ই-স্নানের বিষয়টি। ” – অন্তর্বতীকালীন নির্দেশে জানাল আদালত।

আর বৃহস্পতিবার এই আদালত সাগর মেলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বলেছিল….

” 1) প্রয়োজনে গঙ্গাসাগর মেলার সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ আমরা দেব।যদি আমরা মনে করি যে করোনার হাত থেকে পুণ্যার্থীদের রক্ষা করার জন্য রাজ্য যে যে পদক্ষেপ করেছে বা করতে চলেছে তাতে মানুষ সুরক্ষিত থাকবে না তাহলে উৎসব বন্ধের নির্দেশ আমরা দেব।2) রাজ্যের মুখ্যসচিব, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনা করে আগামীকাল হলফনামা দিন। আদালত এবং মানুষ যাতে ভরসা পান।3) দুর্গাপূজা , ছটপূজার সঙ্গে গঙ্গাসাগর মেলার পরিস্থিতির তুলনা হয়না। একমাত্র কুম্ভমেলা সঙ্গে তুলনা হয়। বাকি পূজা গুলিতে এত বিপুল মানুষ স্নান করতে নামেন না।4) বাঁচার অধিকার সব থেকে বড় মৌলিক অধিকার, বাকি সব পরে।5) বিকল্প খুঁজুন, প্রয়োজনে মানুষ জল নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে। ” – প্রধান বিচারপতি।