কলকাতা ব্যুরো: রবিবার রাত থেকে একটানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের দফারফা অবস্থা। বুধবার বিকেলে বৃষ্টি কমলেও পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা কতদিনে স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না প্রশাসন। যদিও ইতিমধ্যেই কালিম্পং জেলার বেশকিছু রাস্তা গাড়ি চলার যোগ্য করা হয়েছে। ধসে গড়িয়ে পড়া পাথর, ভাঙ্গা গাছ সরিয়ে চলাচলের যোগ্য করতে কোমর বেধেছি গ্রামবাসি ও প্রশাসনের কর্মীরা।
কিন্তু সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগের পথ এখনও যথেষ্ট দুর্গম। টানা বৃষ্টিতে দার্জিলিং, কালিংপংয়ে ৪৭ টি জায়গায় ধ্বস নেমেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এই অবস্থায় কয়েক হাজার পর্যটককে খাবার ও জল দিতে একদিকে পাহাড়িয়া গ্রামগুলির বাসিন্দারা এগিয়ে এসেছেন, পাশাপাশি পর্যটন সংস্থাগুলির সংগঠন কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে এই কাজে। কিন্তু এখনো অন্তরায় যোগাযোগ ব্যবস্থা।
কোনোক্রমে সারারাত ধসের রাস্তায় গাড়িতে কাটিয়ে বুধবার সকালে পাহাড় থেকে নেমে আসার আগে আশপাশের গ্রামগুলির বাসিন্দারা গরম জল খাবার নিয়ে পর্যটকদের দেন। তার পরেই জেলা প্রশাসনের তরফে ছোট ছোট জিপে করে খাবার পাঠানো হয়, সেই সব জায়গায়, যেখানে মঙ্গলবার থেকে ধ্বসের জন্য রাস্তায় গাড়িতে আটকে ছিলেন পর্যটকরা। একইসঙ্গে সেই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পাহাড় থেকে নামার জন্য পর্যটকদের কাছে ভাড়া বাবদ মোটা টাকা দাবি করতে থাকেন।
সেইসব বিভিন্ন খবর পেয়ে ট্যুর অপারেটরদের বিভিন্ন সংগঠন স্বেচ্ছাসেবকদের রাস্তায় নামায় শুকনো খাবার, জল দিয়ে পর্যটকদের জন্য। এমনকি সঠিক গাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়ে তারা পর্যটকদের একাংশকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত নামিয়ে আনেন।
পাহাড়ে ট্যুর অপারেটরদের বহু পুরনো সংগঠন ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল এন্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অনিরুদ্ধ বসু বলেন, এই অবস্থায় আমরা যদি পর্যটকদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে আর মানবিকতা বলে কি থাকল! তাই সকাল থেকে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা শুকনো খাবার, জল, প্রয়োজনীও ওষুধ নিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছেন। নিজেদের মতো করে তারাও গ্রামবাসীদের সঙ্গে পর্যটকদের সহযোগিতা করছেন।
পর্যটন সংস্থার আরেকটি সংগঠনের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল দার্জিলিং, কালিম্পং এর সঙ্গেই সিকিমে আটকে থাকা এ রাজ্যের পর্যটকদের কোন ভাবে বের করে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। যেহেতু জাতীয় সড়ক বন্ধ, তাই সেখান থেকে দার্জিলিং- পেসক হয়ে পর্যটকদের ঘুরপথে কয়েকজনকে আনতে পেরেছেন শিলিগুড়ি পর্যন্ত। আর তাই প্রায় বিপর্যস্ত অবস্থায় কোনরকমে সমতলে ফিরে পর্যটকরা ধন্যবাদ জানাচ্ছেন, সেইসব পাহাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গেই ট্যুর অপারেটরদেরও।