কলকাতা ব্যুরো: যেদিকেই চোখ যাচ্ছে, শুধুই বরফ আর বরফ। এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রইলো দার্জিলিংবাসী। সেই শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে সেই থেকে চলছে তুষারপাত। দার্জিলিংয়ের ঘুমের পাশাপাশি সিকিম ও ভুটানও ঢাকা পড়েছে সাদা বরফের চাদরে।
তবে এই প্রথম নয়, এই মরসুমে গত বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে দার্জিলিংয়ের তুষারপাত। তার থেকে দফায় দফায় তুষারপাত হচ্ছে কুইন অফ হিলসে। আবহাবিদরাও বলতে পারছেন না দার্জিলিংয়ে শেষ কবে এমন তুষারপাত হয়েছে।
অন্যদিকে, স্থানীয়রাও মনে করতে পারছেন এমন তুষারপাত কবে শেষ দেখেছেন তাঁরা। ২০০৩ সালে দার্জিলিংয়ে ভারী তুষারপাত হয়েছিল কিন্তু সেটা এক দফা। এর আগে ১৯৮৬ সালেও একই ঘটনা ঘটে ঘুমে। তবে গত শনিবার দফায় দফায় তুষারপাত হয়েছে ঘুম, দার্জিলিং, বাগোরা, দিলারামে।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পর্যটকদের ভিড় থাকে দার্জিলিং ও দার্জিলিং সংলগ্ন এলাকাগুলিতে। ২০২১-এও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু ডিসেম্বর ২০২১-এর শেষ সপ্তাহ থেকেই রাজ্যে আছড়ে পরে করোনার তৃতীয় ঢেউ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র। সেই তালিকায় ছিল দার্জিলিং, কার্শিয়াঙের মত অঞ্চলও। কিন্তু তারপর ৩১ জানুয়ারি ২০২২-এ পর্যটকদের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয় এইসব পর্যটন কেন্দ্রগুলি।
স্থানীয়রা ভেবেছিলেন, করোনা পরিস্থিতির কারনে হয়তো ভিড় হবে না কুইন অফ হিলসে। কিন্তু রাজ্যে তুষারপাত হবে আর বাঙালি ঘরে বসে থাকবে তা তো হয় না। যথারীতি দার্জিলিংয়ে তুষারপাতের সাক্ষী হতে ভিড় করেছে বহু পর্যটক। এখন খুশির জোয়ার পর্যটন মহলে।
অন্য সময় দার্জিলিং গেলে শুধু চোখে পড়ে তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা আর সান্দাকফু। কিন্তু এই বছর ঘুম-সহ কার্শিয়াঙের চটকপুরেও তুষারপাত দেখা যাচ্ছে। এই নিয়ে ৩৮ দিনের মধ্যে ষষ্ঠ বার তুষারপাত হল এই অঞ্চলগুলিতে।
একই অবস্থা সিকিমেও। কাছে পিঠের মধ্যে বাঙালির বরফ দেখার স্বপ্ন পূরণ করে সিকিম। সিকিমে গেলেই আপনি তুষারপাতের সাক্ষী হতে পারবেন এবং হাতের মুঠোয় বরফ পাবেন। কিন্তু এই বছর এমন তুষারপাতের সাক্ষী হল সিকিমবাসী, যা বিগত ২০ বছরে দেখেনি কেউই।
প্রবল তুষারপাতের জেরে সেরপাং, থ্রুমশিং লা, সেঙ্গর এবং লাটোং লা এলাকায় ইতিমধ্যেই যানবাহন বন্ধ করা হয়েছে। তবে তাতে আটকানো যায়নি পর্যটকদের। আর পর্যটকদের মধ্যে এই উচ্ছ্বাসে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।