কলকাতা ব্যুরো: পাঁচ বছর পর অবশেষে জিটিএ নির্বাচন হতে চলেছে পাহাড়ে। মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ে সর্বদল বৈঠক শেষে ঘোষণা করা হলো দিনক্ষণ। জানা গিয়েছে, আগামী ২৬ জুন জিটিএ নির্বাচন হবে। ভোটগণনা ও ফলপ্রকাশ হবে ২৯ তারিখ। এই মর্মে ঘোষণা করলেন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা স্পেশ্যাল অবজার্ভার। আগামী ২৭ মে সরকারিভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। তবে নির্বাচন নিয়ে আপত্তি তুলেছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
তবে ইতিমধ্যে হাইকোর্টে এই নির্বাচন আটকাতে মামলা দায়ের করেছিল কয়েকটি সংগঠন। তাঁদের যুক্তি ছিল, ২০১৩ সালে জিটিএর বিধি পরিবর্তন করতে যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছিল, তারই এখনো ফয়সালা হয়নি। তাছাড়া ২০১৭ সাল থেকে জিটিএ নির্বাচন বন্ধ। প্রশাসক বসানো রয়েছে। এই অবস্থায় আগে মূল মামলাগুলির ফয়সালা করেই তারপর সেখানে নির্বাচন হোক। যদিও বিচারপতি রাজশেখর মান্থা নির্বাচন বা তার বিজ্ঞপ্তি স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দেন। আদালতের বক্তব্য, জুন মাসে এই মামলার শুনানি হবে। তার আগে যদি নির্বাচন হয়েও যায়, এই বিচারের রায়ের উপরেই তার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক তথা জিটিএ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব সামলানো এস পুণ্যবালামের কার্যালয়ে মঙ্গলবার পাহাড়ের সবকটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি। ছিলেন স্পেশ্যাল অবজার্ভার এ জি বর্ধনও। এখনই জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতায় বৈঠক বয়কট করেন বিজেপি, জিএনএলএফের প্রতিনিধিরা। তবে তাদের আপত্তি উড়িয়েই ২৭ মে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এদিনের বৈঠকে স্থির হয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপের খুঁটিনাটি।
স্পেশ্যাল অবজার্ভার এ জি বর্ধন জানান, আগামী ২৭ তারিখ সরকারিভাবে জিটিএ নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেই শুরু হয়ে যাবে মনোনয়ন পর্ব। ২৭ থেকে সাতদিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব চলবে। তারপর প্রত্যাহার, স্ক্রুটিনি পর্ব পেরিয়ে ২৬ জুন ভোট। এর জন্য দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের মহকুমাশাসককে অতিরিক্ত রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গণনা ও ফলপ্রকাশ হবে আগামী ২৯ জুন।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৫ বছর পর জিটিএ নির্বাচন হতে চলেছে। জুনে এই নির্বাচন হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো প্রস্তুতি শুরু হয়। নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে পাহাড়ের দলগুলি রাজি থাকলেও, পরে বিরোধিতা করেন বিমল গুরুং। আগে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান চাই, তারপর জিটিএ নির্বাচন হবে। তাঁদের এই দাবি না মানলে অনশন হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। তবে মোর্চার এই দাবি কার্যত উড়িয়ে ২৬ জুনই জিটিএ ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পথে এগোচ্ছে সরকার।