এক নজরে

বিহারে বিজেপি-নীতীশ সম্পর্কে ফাটল

By admin

August 08, 2022

কলকাতা ব্যুরো: বিহারে ফের পালাবদলের ইঙ্গিত৷ বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ইঙ্গিত দিয়ে রবিবার কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে ফোন করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার৷ তাঁর সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়ে নেন তিনি৷ এরপরই আজ সোমবার কংগ্রেসের তরফে সব বিধায়ককে পাটনায় ডেকে পাঠানো হয়৷ বিকালে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন দলের পরিষদীয় নেতা অজিত শর্মা৷ তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সব কংগ্রেস বিধায়ককে আজ বিকেলের মধ্যে পাটনায় চলে আসতে বলা হয়েছে৷ তারপর বৈঠক হবে৷এদিন কংগ্রেসের পাশাপাশি দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসছে লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি৷ বিহার বিধানসভায় তারাই বড় দল৷ দলের নেতা তেজস্বী যাদব৷ আরজেডির তরফে বিধায়কদের বুধবার পর্যন্ত পাটনাতে থাকতে বলা হয়েছে৷ অন্যদিকে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সব বিধায়ক ও সাংসদকে নিয়ে বৈঠক করবেন নীতীশ কুমার৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, ওই বৈঠকেই বিজেপির সঙ্গ ত্যাগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে জেডিইউ৷ তারপরই এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেন নীতীশ৷২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির চেয়ে কম আসন পেয়েও মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন নীতীশ কুমার৷ সেই থেকেই সমস্যার সূত্রপাত৷ রাজ্য বিজেপির নেতারা নীতীশের উপর অসন্তুষ্ট৷ অন্যদিকে, বেশি আসন পেয়ে রাজ্যে মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া বিজেপি নেতারা প্রশাসনের কাজে দাদাগিরি করায় প্রচণ্ড চটেন নীতীশও৷ মতবিরোধ থাকলেও প্রথম প্রথম দুই পক্ষই একে অপরের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল৷ কিন্তু গত কয়েক মাসে দুই দলের সম্পর্কে ফাটল ধরে৷ নীতীশ আবার লালুপ্রসাদের ছেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে শুরু করেন৷ তখনই বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব সামনে বেরিয়ে পড়ে৷ তার উপর কেন্দ্রের ডাকা কোনও বৈঠকে যোগ না দেওয়া, বিদায়ী রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সৌজন্যে ডাকা নৈশভোজে এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর শপথে গরহাজির থাকা নীতীশের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কের ফাটল আরও চওড়া হয়েছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল৷এই আবহে রবিবার জেডিইউ-র তরফে ঘোষণা করা হয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় দলের কোনও প্রতিনিধি থাকবে না৷ তার কয়েকঘণ্টার মধ্যে সোনিয়াকে ফোন করেন নীতীশ৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, বিহারে যা পরিস্থিতি তাতে যে কোনও সময় ভেঙে যেতে পারে জেডিইউ-বিজেপি জোট৷ তাতে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তা কাটানোর দুটো রাস্তা খোলা থাকবে৷ একটি নির্বাচন, অপরটি আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে জেডিইউ-র জোট৷ অধিকাংশ জেডিইউ বিধায়কই আরজেডির সঙ্গে জোট চাইছেন৷ আরজেডি-কংগ্রেসের যা বিধায়ক রয়েছে তার সাহায্যে আবার অনায়াসে সরকার গড়ে ফেলতে পারবে জেডিইউ৷কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নীতীশের সঙ্গে আরজেডি আবার সরকার করার ঝুঁকি নেবে? এর আগে ২০১৫ সালে বিজেপিকে ঠেকাতে মহাজোট তৈরি করে বিহারে সরকার গড়েছিল আরজেডি-জেডিইউ৷ দু’বছর পর জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নীতীশ৷ হাত মেলান বিজেপির সঙ্গে৷ তখন নীতীশকে বিশ্বাসঘাতক বলে তোপ দেগেছিলেন লালু৷অন্যদিকে, সামনে এতগুলি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এবং ২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিও কি চাইবে বিহারে ক্ষমতা হারাতে? বিজেপি-নীতীশ বিরোধের জল কোন দিকে গড়ায় সেই দিকেই নজর সব রাজনৈতিক দলগুলির৷