কলকাতা ব্যুরো: ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী রাজ্যের কোভিড গ্রাফ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলো প্রায় দেড়গুণ। তাল মিলিয়ে বেড়ে চলেছে মৃত্যুও। পাশাপাশি লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের হার। আর এই পরিসংখ্যানই ঘুম কেড়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তাদের।
এতদিন কলকাতার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার নামও। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় কোভিড পজিটিভ হয়েছেন ৬ হাজার ১৭০ জন। রাতারাতি আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার সংক্রমিতের সংখ্যা। যেখানে মঙ্গলবারের রিপোর্ট বলছে, এই জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৯১। তবে বুধবার কলকাতার কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা বাড়ানো হলো। রাজ্যজুড়ে করোনার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৫ থেকে বেড়ে বর্তমানে কলকাতার কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা পৌঁছলো ৪৮-এ।
আবার গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৯৮। এদিন সেই সংখ্যাটা বেড়ে হল ১,২৮০। সবমিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মোট কোভিড আক্রান্ত হয়েছে ১৪ হাজার ২২ জন।
স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, বুধবার রাজ্যের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৩২৩ জন। যার মধ্যে চিকিৎসাধীন বা সক্রিয় করোনা আক্রান্ত ৩৩ হাজার ৪২ জন। মঙ্গলবারের তুলনায় এই সংখ্যাটা বেড়েছে ৭ হাজার ৫৬৭। আর সুস্থ হয়েছেন ১৬ লক্ষ ২৫ হাজার ৪৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা জয়ী হয়েছেন ৬ হাজার ৪৩৮ জন।
মঙ্গলবারের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে রাজ্যের করোনা পরীক্ষা। স্বাস্থ্যভবনের লক্ষ্য ছিল, দৈনিক অন্তত ৫৫ হাজার কোভিড পরীক্ষা করতে হবে। এদিন সেই লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে গিয়েছে। পরীক্ষা হয়েছে ৬০ হাজার ৫১১টি নমুনা। স্বাভাবিকভাবে বেড়েছে সংক্রমণের হার-ও। এদিন রাজ্যে সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়াল ২৩. ১৭ শতাংশ। অনেকটা বেড়েছে কলকাতার সংক্রমণের হার (৩৭.৫৪ শতাংশ)।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউ প্রাণঘাতী নয়। কিন্তু এদিন রাজ্যের মৃত্যুর গ্রাফও ঊর্ধ্বমুখী। করোনায় একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। তার মধ্যে ৫ জন কলকাতা এবং ৫ জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। বাকিদের মধ্যে ২ জন দক্ষিন ২৪ পরগনা এবং ২ জন হাওড়ার বাসিন্দা। বাকিরা মুর্শিদাবাদ, বীরভূম এবং হুগলির বাসিন্দা। সবমিলিয়ে ক্রমশ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। আর এই সংক্রমণের প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন পরিষেবায়।
জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যভবনের ৬৬ জন করোনা সংক্রমিত। সংক্রমণ ছড়ানোয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পার্ক স্ট্রিটের এসবিআই ব্যাংকের ব্রাঞ্চও। ঝাড়গ্রাম এবং বেলপাহাড়ি হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড পজিটিভ হয়েছেন বলে খবর।