কলকাতা ব্যুরো: কয়লা পাচারকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে। সোমবার সন্ধ্যায় মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। আজই তাঁকে ট্রানজিট রিম্যান্ডে কলকাতা আনার কথা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, পুনের গোপন ঠিকানা থেকে লালাকে গ্রেফতার করেছেন গোয়েন্দারা। কয়লাপাচারের একটি মামলায় তাঁকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।
প্রসঙ্গত, কয়লাকাণ্ডের তদন্তে নেমে লালার শ্বশুরবাড়িতে হানা দিয়েছিলেন গোয়েন্দারা। সেখানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হলেও লালার খোঁজ মেলেনি। অভিযোগ, আসানসোল ও লাগোয়া এলাকায় পরিত্যক্ত খনি থেকে টন টন কয়লা তুলে চোরাই পথে পাচার করেছেন লালা। এই তদন্তে ইতিমধ্যে একাধিক পুলিশ আধিকারিককেও জেরা করেছেন তদন্তকারীরা।
অন্যদিকে এই ঘটনার তদন্তে সোমবার বিকেলেই লালার ঘনিষ্ঠ ৪ কয়লা মাফিয়াকে গ্রেফতার করেছিলেন গোয়েন্দারা। তার পরই লালাকে গ্রেফতার করেন তাঁরা। আর মঙ্গলবার দুপুরে কয়লাপাচার কাণ্ডে ধৃত চার কয়লা মফিয়াকে আসানসোলের সিবিআই আদালতে তোলা হয়। ধৃত চার জন বেআইনি কয়লা কারবারের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। তাদের নাম – জয়দেব মণ্ডল, নিরোদ মণ্ডল, নারান নন্দা ও গুরুপদ মাজি। এদের মধ্যে জয়দেবকে চারদিনের এবং বাকি তিন জনকে সাতদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, সোমবারই নিজাম প্যালেসে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর তাদের গ্রেফতার করে সিবিআই। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে এই চারজনকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়ে আসা হয়। এর জেরে এদিন আসানসোল আদালত কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়।
এই গ্রেফতারিকে কয়লাপাচার-কাণ্ডে সিবিআইয়ের বড়সড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। সিবিআই সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, এদের সকলেরই বেআইনি কয়লা কারবারের যোগাযোগ ছিল অনুপ মাজি ওরফে লালার সঙ্গে। প্রত্যেকেই লালার ঘনিষ্ঠ ছিল। তাই চারজনকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে সিবিআই।
চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেআইনি কয়লা কাণ্ড নিয়ে আরও বহু তথ্য সামনে আসবে বলে সিবিআইয়ের দাবি। শুধু তাই নয় আরও অনেক প্রভাবশালীদের নাম বেরিয়ে আসতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু বলেন, সিবিআই সাত দিনের জন্য রিমান্ড চেয়েছে। আমরা তা কম করতে বলেছি কারণ, চারজনই অসুস্থ। তারা তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। আগামিদিনেও সহযোগিতা করবেন। ওই চারজনের কাছে সঠিক উত্তর না পেয়েই সিবিআই তাদের গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে।