তিন
ফেসবুকেই কোনও সূত্রে ডলি নাসরিন নামে একজন ভদ্রমহিলার খোঁজ পাই যিনি বাগেরহাটের বাসিন্দা। ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠাই। অত্যন্ত সজ্জন ভদ্র ডলিদি ধৈর্য ধরে আমার সব কথা শোনেন। সোতাল গ্ৰাম অবশ্য তিনি চিনতে পারেন নি তবে পুরোপুরি হতাশ করেননি। তাঁর এক বোনের কথা বলেন , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছেন বাগেরহাটের বাড়িতে, নাম ডা. শিরিন আহমেদ। উনি সোতাল গ্ৰামের নাম শুনেছেন,বন্ধুত্ব হল শিরিনদির সঙ্গেও।

ব্যস্ আমাকে আর কে পায়! এইসব কথোপকথন চলতে চলতে ডলিদির বন্ধুর ভাই মিলন ব্যানার্জীর সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব হল। তিনি পেশায় উকিল , নানারকম মক্কেল আসে তাঁর কাছে। সেরকমই একজন মক্কেল থাকেন সোতালে। এরপর তিনি যা করলেন জীবনে ভুলব না। সোতালে গিয়ে আমাদের বাড়ি খুঁজে বের করে ছবি তুলে পাঠালেন। আমি ছবি দেখালাম কাকাকে। কাকা কেঁদে ফেলেছিলেন ছবিগুলো দেখে।

ইতিমধ্যে শিরিনদি ঠিক করলেন বেড়াতে আসবেন কলকাতায়। আমি তো দেখা করার জন্য উদগ্ৰীব শিরিনদিও তাই। কলকাতায় পিয়ারলেস হোটেলে আমাদের দেখা হল। কি যে আনন্দ হল বলার কথা নয়। অনেক কথা হল বাগেরহাট নিয়ে আমাদের আশ্চর্য যোগাযোগ নিয়ে। হাতে সময় কম, শিরিনদি ফিরে গেলেন। এরপর পঁচিশে বৈশাখ কাটাতে কলকাতায় এলেন মিলন ব্যানার্জী। এতদিনে উনি আমার দাদা হয়ে গেছেন। কলকাতায় পঁচিশে বৈশাখ দেখে মুগ্ধ তিনি। সারাদিন কলকাতা ঘুরে মায়ের কাছে গেলাম। সেখানে সবাই অপেক্ষারত দেশের গল্প শোনার জন্যে। খুব ভালো কেটেছিল সেদিন। এরপরে ঘটল এক আশ্চর্য ঘটনা। যে ঘটনায় বুঝলাম বাংলাদেশ যাওয়া সত্যিই ঘটবে।
আমার বন্ধু ও গুরুবোন জুলি সল্টলেকের বাসিন্দা। দু’হাজার ছয় সাল থেকে একসঙ্গে গান শিখি। দু’হাজার পনেরো সালে এদিন দুপুরে গিয়েছি ওর বাড়ি আড্ডা দিত।