কলকাতা ব্যুরো: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন গোটা দেশ কম্পমান, তখন উদাসীন ভোটের বাংলা। এ রাজ্যেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনা। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে। কিন্তু ভোটের খেলায় মত্ত রাজনীতিকরা এখন ভুলেছেন সে ব্যাপারে সতর্কতার কথা। গেরুয়া থেকে সবুজ বা লাল, ভোট-রাজনীতির বাজারে ক্ষমতা দখল করতে এ ওর বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে বাজার গরম করছে, কিন্তু করোনা ঠেকাতে সকলে সচেতন হওয়া উচিত, এই একটি ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছে না। সকলে যেন অলিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ, এই ইস্যুতে কথা না বলতে। পাছে তাতে ভোট বাক্স ক্ষতি হয়। যদিও বিশেষজ্ঞরা আতঙ্কিত, এখনো এ রাজ্যে তেমনভাবে সতর্কতাঃ না নেওয়ায়। মে মাসের প্রথম সপ্তাহের পর রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে।
অতিমারির প্রথম ঢেউকে ছাপিয়ে গেল দ্বিতীয় ঢেউ। দেশের দৈনিক সংক্রমণ ছাড়িয়ে গেল ১ লক্ষ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৩ হাজার ৫৫৮ জন। এক দিনে এত লোক এর আগে আক্রান্ত হননি দেশে। গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর দেশের দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৯৭ হাজার ৮৯৪। তার পর থেকে তা কমতে শুরু করে। ক্রম পর্যায়ে কমতে কমতে তা ১০ হাজারের নীচে নেমেছিল। এর কিছু দিনের মধ্যেই দেশে আছড়ে পড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। যার জেরে দৈনিক সংক্রমণ এই পর্যায়ে পৌঁছে গেল।দেখা গিয়েছে যে দেশের এই দৈনিক সংক্রমণের সিংহভাগই ৯-১০টি রাজ্যে থেকে। আরও ৫-৬টি রাজ্যের পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে। তবে মহারাষ্ট্রের মতো অবস্থায় এখনও অন্য রাজ্যেগুলিতে তৈরি হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৪ জন। গোটা করোনা পর্বে দেশের কোনও একটি রাজ্যে একদিনে সংক্রমণের নিরিখে যা সর্বোচ্চ। সে রাজ্যে বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি মুম্বইয়ের অবস্থাও খারাপ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বাণিজ্যনগরীতে নতুন আক্রান্ত ১১ হাজার ১৬৩ জন। করোনা পর্বে দেশের কোনও একটি শহরে একদিনে সংক্রমণের নিরিখেও যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ।
মহারাষ্ট্র ছাড়াও ছত্তিশগড়, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাতেও কোভিড পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪ হাজার ৩৩ জন। এ বছরে এটাই রাজধানীতে হওয়া একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। গত বছর ৪ ডিসেম্বর শেষবার দিল্লির দৈনিক সংক্রমণ ৪ হাজার ছাড়িয়েছিল। তার পর ছাড়াল সোমবার। একই অবস্থা ছত্তীসগঢ়ে। সেখানে আক্রান্ত ৫ হাজার ২৫০ জন। করোনার প্রথম দফাতেও এক দিনে এত লোক আক্রান্ত হননি ছত্তীসগঢ়ে। কর্নাটক এবং উত্তর প্রদেশেও গত ক’দিন ধরে দৈনিক সংক্রমণ ৪ হাজার ছাড়াচ্ছে। তামিলনাড়ুতে তা সাড়ে ৩ হাজার। পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাতে দৈনিক আক্রান্ত ৩ হাজারের আশপাশে। দেশের দৈনিক আক্রান্তের সিংহভাগই এই ক’টি রাজ্যের।করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সংক্রমণেরর পাশাপাশি বাড়িয়ে দিয়েছে দেশের দৈনিক মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৪৭৮ জনের। এর মধ্যে ২২২ জনই মহারাষ্ট্রের। দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশেও দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। দেশে সংক্রমণের হারও গত ক’দিনে বেড়েছে। সোমবার তা পৌঁছে গিয়েছে ১১.৫৯ শতাংশে। প্রায় ৫ মাস পর দেশের দৈনিক সংক্রমণ এই পর্যায়ে পৌঁছল। এই সংক্রমণ বৃদ্ধি বাড়িয়ে দিচ্ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৫০ হাজার বৃদ্ধির জেরে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লক্ষ ৪১ হাজারে