কলকাতা ব্যুরো: সংস্কৃতে একটা কথা আছে, ন যযৌ, ন তস্তৌ। করোনা সংক্রমণে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাটা তাই। বাড়েও না, কমেও না। তিন সপ্তাহ পরেও পরিস্থিতির কোন বদল নেই।কী করে সংক্রমণ, সুস্থতা এবং দৈনিক মৃত্যুর গড় একজায়গায় এতদিন ধরে অনড় হয়ে আছে, তার ব্যাখা কেউ দিচ্ছে না। দৈনিক করোনা টেস্টের সংখ্যার গড়ও মোটামুটি একটি রেঞ্জে ঘোরাফেরা করছে। প্রশ্ন উঠছে, টেস্ট নির্দিষ্ট রেঞ্জে আছে বলেই কি সংক্রমণ শনাক্তকরণও এটা নির্দিষ্ট গড়ে দাঁড়িয়ে আছে?এই প্রশ্নের জবাবও কেউ দিচ্ছে না। তবে পরিসংখ্যানে সংক্রমণ বাড়ছে দেখা না যাওয়া মানে যে আক্রান্তের সংখ্যা কমা নয়, তা ইতিমধ্যে বোঝা গিয়েছে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষণায়। অনেকটা সেই তত্ত্বে সায় দিল আমাদের দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিয়ামক সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।সরকারি এই সংস্থা জানাচ্ছে, উপসর্গবিহীন বা কম উপসর্গযুক্তদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে টেস্ট করা হচ্ছে না। তাছাড়া আতঙ্কে কেউ কেউ টেস্ট করাচ্ছেন না। এই তিন ধরনের মিলিত সংখ্যা কিন্তু কম নয়। আইসিএমআর-এর সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, যদি ১ জন করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে, তাহলে শনাক্তকরণের আওতা থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে ৮০ থেকে ১৩০ জন মানুষ। মোট করোনা পজিটিভের নিরিখে এই শনাক্তকরণের আওতার বাইরে থাকা সংখ্যার বিপুলতা তাহলে বোঝাই যাচ্ছে।আইসিএমআর-এর এই হিসেব ধরলে আমাদের দেশে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৫০ লক্ষ নয়, কয়েক কোটি। পশ্চিমবঙ্গেও ২ লক্ষ নয়, অন্তত এক কোটি। সুস্থতার হার ভালো না থাকলে বিপদ চরমে থাকত। গত ২৪ ঘণ্টাতেও রাজ্যে সংক্রমণ, সুস্থতা আগের মতোই। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩,২৩৭, সংক্রমণ মুক্তের সংখ্যা ২,৯৭১। মৃতের সংখ্যাটা শুধু বুধবার ৬০ পেরিয়ে গেল।গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। ফলে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বুধবার পর্যন্ত ৪,১২৩, মোট আক্রান্ত ২,১২,৩৮৩ ও সংক্রমণ মুক্তের সংখ্যা ১,৮৪,১১৩। কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ১৫, উত্তর ২৪ পরগনায় ১১, হাওড়ায় ৮। ৫ জন করে মৃত্যু পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুরে। পূর্ব বর্ধমানে ৪ জন করোনার বলি। ৩ জন মৃত্যু দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ২ জন করে মারা গিয়েছেন নদিয়া, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায়। ১ জন করে মৃত্যু মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে।কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮৪ জন, সুস্থ হয়েছেন ৫০৭ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় সংখ্যা দুটো যথাক্রমে ৫০৬ ও ৫৯৩, হাওড়ায় ১৯২ ও ১৩৬ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৮৮ ও ১০৬ জন।